সৌরজগত ও ভূমণ্ডল অধ্যায়ের অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর

সৌরজগত ও ভূমণ্ডল অধ্যায়ের অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন-১. নেপচুন গ্রহ শীতল হওয়ার কারণ কী?

উত্তর: সূর্য থেকে দূরত্ব বেশি হওয়ার কারণে নেপচুন গ্রহটি শীতল। সাধারণত সূর্যের থেকে দূরত্বের ওপর গ্রহসমূহের তাপমাত্রা নির্ভর করে। সূর্য থেকে নেপচুনের দূরত্ব ৪৫০ কোটি কিলোমিটার। এত অধিক দূরত্বে অবস্থানের কারণে গ্রহটির তাপমাত্রা অন্যান্য গ্রহ থেকে তুলনামূলকভাবে কম এবং গ্রহটি শীতল।

প্রশ্ন-২. ২১শে জুনে সূর্যের অবস্থান ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: ২১ শে জুন সূর্য উত্তর মেরুর সবচেয়ে নিকটে এবং দক্ষিণ মেরুর সবচেয়ে দূরবর্তী স্থানে অবস্থান করে। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে পরিভ্রমণকালে ২১ জুন কক্ষপথে এমন এক অবস্থানে পৌঁছে যেখানে উত্তর মেরু সূর্যের দিকে সর্বাপেক্ষা বেশি ঝুঁকে থাকে। অপরদিকে দক্ষিণ মেরু সূর্য থেকে সর্বাপেক্ষা দূরে সরে পড়ে। এ তারিখে উত্তর গোলার্ধে সম্পূর্ণ দিন সবচেয়ে বড় এবং রাত সবচেয়ে ছোট হয়। আর দক্ষিণ গোলার্ধে সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থা বিরাজ করে।

প্রশ্ন-৩. সৌরজগতের যে কোনো একটি গ্রহের ব্যাখ্যা দাও।

উত্তর: বুধ সৌরজগতের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম এবং সূর্যের নিকটতম গ্রহ। বুধের ব্যাস ৪৮৫০ কিলোমিটার এবং ওজন পৃথিবীর ৫০ ভাগের ৩ ভাগের সমান। সূর্যের চারদিক পরিক্রমণ করতে এর ৮৮ দিন সময় লাগে। সূর্য থেকে এর গড় দূরত্ব ৫.৮ কিলোমিটার। বুধের কোনো উপগ্রহ নেই। সূর্যের নিকটতম গ্রহ বলে এর তাপমাত্রা অত্যধিক।

প্রশ্ন-৪. তিনটি বলয়সম্পন্ন গ্রহের বর্ণনা দাও।

উত্তর: তিনটি উজ্জ্বল বলয় শনিকে বেষ্টন করে আছে বলে শনিকে তিনটি বলয়সম্পন্ন গ্রহ বলা যায়। এটি সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ। সূর্য থেকে শনির দূরত্ব ১৪৩ কোটি কি. মি.। শনি ২৯ বছর ৫ মাসে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে এবং ১০ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে নিজ অক্ষে একবার আবর্তন করে। শনি পৃথিবী থেকে প্রায় ৯ গুণ বড় এবং খালি চোখে এটি দেখা যায়। শনির ২২টি উপগ্রহ রয়েছে।

প্রশ্ন-৫. সৌর বছর সম্পর্কে আলোচনা কর।

উত্তর: আপন কক্ষে আবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী একটি নির্দিষ্ট পথে সূর্যের চতুর্দিকে পরিক্রমণ করে। সূর্যকে একবার পরিক্রমণ করতে পৃথিবীর যে সময় লাগে তাকে সৌর বছর বলে। সূর্যকে একবার পরিক্রমণ করতে পৃথিবীর ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড সময়ের প্রয়োজন হয়। ইংরেজি হিসেবে গণনার সুবিধার্থে ৩৬৫ দিনে এক সৌর বছর ধরা হয়।

প্রশ্ন-৬. ওজোন স্তর পৃথিবীকে প্রাণিজগতের বাস উপযোগী করেছে- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: অদৃশ্য যে গ্যাসীয় আবরণ পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে তাকে বায়ুমণ্ডল বলে। বায়ুমণ্ডলে ওজোন গ্যাসের একটি স্তর আছে যা ওজোনস্তর নামে পরিচিত। এর গভীরতা প্রায় ১২-১৬ কি.মি.। ওজোনস্তর সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করায় এর তাপমাত্রা প্রায় ৭৬° সেলসিয়াস। এ স্তরটি পৃথিবীকে প্রাণিজগতের বাস উপযোগী করছে।

প্রশ্ন-৭. শুক্র গ্রহে এসিড বৃষ্টি হয় কেন?

উত্তর: পৃথিবীর মতো শুক্রের একটি বায়ুমণ্ডল রয়েছে কিন্তু এতে অক্সিজেন নেই। কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ প্রায় শতকরা ৯৬ ভাগ। গ্রহটিতে কার্বন ডাই-অক্সাইডের ঘন মেঘের কারণে এসিড সৃষ্টি হয়ে থাকে। শুক্রের পৃষ্ঠে পৃথিবীর তুলনায় ৯০ গুণ বেশি বাতাসের চাপ রয়েছে।

প্রশ্ন-৮. সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে বৃহস্পতির অধিক সময় প্রয়োজন হয় কেন?

উত্তর: বৃহস্পতি গ্রহের ব্যাস ১,৩৯,৮২২ কিলোমিটার। এটি সূর্য থেকে প্রায় ৭৭.৮ কোটি কিলোমিটার দূরে। তাই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে বৃহস্পতির অধিক সময় লাগে। বৃহস্পতি ১২ বছরে একবার সূর্যকে এবং ৯ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটে নিজ অক্ষে একবার আবর্তন করে।

প্রশ্ন-৯. ভরাকটাল বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণে যে প্রবল জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তাকেই ভরাকটাল বলে।আমাবস্যা তিথিতে চন্দ্র ও সূর্য পৃথিবীর একই পার্শ্বে এবং পূর্ণিমা তিথিতে পৃথিবীর এক পার্শ্বে চাঁদ ও অপর পার্শ্বে সূর্য অবস্থান করে। ফলে এই দুই তিথিতে চন্দ্র ও সূর্য সমসূত্রে থাকে এবং উভয়ের মিলিত আকর্ষণে যে প্রবল জোয়ারের সৃষ্টি হয় তাই ভরাকটাল।

প্রশ্ন-১০. আহ্নিক গতি কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: পৃথিবী নিজ অক্ষে বা মেরু রেখায় পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে। এভাবে আবর্তন করতে পৃথিবীর প্রায় ২৪ ঘণ্টা বা ১ দিন সময় লাগে। সঠিক হিসেবে এ সময় হলো ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড। পৃথিবীর এ গতিকে আহ্নিক গতি বা দৈনিক গতি বলে। আহ্নিক গতির ফলে পৃথিবীতে দিন ও রাত হয়।

প্রশ্ন-১১. ঋতু পরিবর্তনের কারণগুলো কী কী?

উত্তর: পৃথিবীর বার্ষিক গতির ফলে সূর্যরশ্মি কোথাও লম্বভাবে আবার কোথাও তির্যকভাবে পতিত হয়। ফলে তাপমাত্রার পার্থক্য ঘটে এবং ঋতু পরিবর্তিত হয়। আবার কোনো স্থানে দিবাভাগের পরিমাণ রাতের পরিমাণ হতে দীর্ঘ হলে সেই স্থানে বায়ুমণ্ডল অধিকতর উষ্ণ থাকে। এভাবে বছরের বিভিন্ন সময়ে ভূ-পৃষ্ঠের সর্বত্র তাপের তারতম্য হয় এবং ঋতু পরিবর্তন ঘটে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে সূর্যরশ্মির পতনের কৌণিক তারতম্যের কারণেও ঋতু পরিবর্তিত হয়।

প্রশ্ন-১২. জোয়ার-ভাটার একটি কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: জোয়ার-ভাটার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব। পৃথিবীর সকল পদার্থের আকর্ষণ আছে এবং একটি অপরটিকে আকর্ষণ করে। এই মাধ্যাকর্ষণের ফলেই পৃথিবী সূর্যের এবং চন্দ্র পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছে। সূর্য চন্দ্র অপেক্ষা ২.৬০ কোটি গুণ বড় হলেও পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব চন্দ্রের দূরত্ব থেকে অনেক বেশি বলে পৃথিবীর ওপর চন্দ্রের আকর্ষণ শক্তি সূর্য অপেক্ষা প্রায় দ্বিগুণ। তাই চন্দ্রের আকর্ষণেই জোয়ার-ভাটা হয়।

প্রশ্ন-১৩. অশ্মমণ্ডল কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: ভূত্বকের নিচের স্তরই গুরুমণ্ডল। ভূত্বক ও গুরুমণ্ডলের মাঝে একটি অত্যন্ত পাতলা স্তর আছে। গুরুমণ্ডলীয় স্তরটি প্রায় ২.৮৮৫ কি.মি. পুরু। গুরুমণ্ডলের ঊর্ধ্বাংশের শিলা কঠিন ও ভঙ্গুর। যা প্রায় ১০ কি.মি. গভীর। ভূত্বক ও গুরুমণ্ডলের ঊর্ধ্বাংশ ১০০ কি.মি. গভীর পর্যন্ত পুরু। এ স্তরকে একত্রে শিলামণ্ডল বা অশ্মমণ্ডল বলে।

প্রশ্ন-১৪. মঙ্গল গ্রহে প্রাণীর অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয় কেন?

উত্তর: মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে শতকরা ৩ ভাগ নাইট্রোজেন ও শতকরা ২ ভাগ আরগন গ্যাস আছে। এখানে পানির পরিমাণ খুবই কম, যা প্রাণী জগতের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। তাছাড়া এটি পৃথিবীর তুলনায় অনেক ঠান্ডা যার গড় উত্তাপ হিমাঙ্কের নিচে থাকে। এ সকল কারণে মঙ্গল গ্রহে প্রাণীর অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়।

প্রশ্ন-১৫. আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: ১৮০ ডিগ্রী দ্রাঘিমা রেখাকে অবলম্বন করে সম্পূর্ণভাবে জলভাগের ওপর দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণে প্রসারিত একটি রেখা কল্পনা করা হয়। একে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বলে। এ রেখাটির ফলে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে পূর্ব বা পশ্চিমে দীর্ঘপথ ভ্রমণ করার সময় স্থানীয় সময়ের পার্থক্যের সঙ্গে সঙ্গে সপ্তাহের দিন বা বার নিয়ে গরমিল দূর হয়। এ সকল নানাবিধ গরমিল ও অসুবিধা দূর করার জন্য আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

প্রশ্ন-১৬. বার্ষিক গতি কাকে বলে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: পৃথিবী নিজ অক্ষে অবিরাম ঘুরতে ঘুরতে একটি নির্দিষ্ট উপ- বৃত্তাকার কক্ষপথে, নির্দিষ্ট দিকে এবং নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করছে। পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে পৃথিবীর এই পরিক্রমণকে বার্ষিক গতি বলে। পৃথিবী প্রতি সেকেন্ডে ৩০ কিলোমিটার বেগে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। সূর্যকে পরিক্রমণ করতে পৃথিবীর এক বছর সময় লাগে। বার্ষিক গতির ফলে পৃথিবীতে দিন-রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি ও ঋতু পরিবর্তন ঘটে।

সৌরজগত ও ভূমণ্ডল অধ্যায়ের অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর

সৃজনশীল প্রশ্ন-

১. রুমি গ্রীষ্মের ছুটিতে নোয়াখালীর হাতিয়ায় বেড়াতে যায়। রুমি যে বাড়িতে উঠে তাঁর পাশ দিয়েই একটি নদী বয়ে গেছে। সে লক্ষ করে, এক সময় নদীটি পানিতে কানায় কানায় ভরে যায় আবার নির্দিষ্ট সময় পরে পানি অনেক নিচে নেমে যায়।

ক. অক্ষাংশ কাকে বলে?

খ. প্রতিপাদ স্থান ধারণার ব্যাখ্যা দাও।

গ. রুমির দেখা ঘটনাটির কারণ ব্যাখ্যা কর।

ঘ. বাংলাদেশের ওপর উক্ত ঘটনার প্রভাব বিশ্লেষণ কর।

২. ডিসেম্বর মাসে আবিরের বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষা শেষ হয় বিকাল ৫টায়। বাসায় পৌঁছার পূর্বেই সূর্য অস্ত যায়। কিন্তু সে ভাবতে থাকে জুলাই মাসে ২য় সাময়িক পরীক্ষা দিয়ে বাসায় যাওয়ার পর সে কিছুটা সময় খেলতে পারত।

ক. পৃথিবীর অনুসূর কাকে বলে?

খ. ২১শে জুনে সূর্যের অবস্থান ব্যাখ্যা কর।

গ. আবিরের বাসায় পৌঁছার আগেই সূর্য অস্ত যাওয়ার কারণ কী? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. এর সাথে কি ঋতু পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

৩. ভূগোল পড়ছিল ফারিন। মালয়েশিয়া থেকে শিমু ফোন করে। ফারিন নিজের ঘড়িতে তখন সময় দেখে রাত ৮টা। শিমু বলে তার সময় রাত ১০টা। তারপর ফারিন চট্টগ্রামের সানাকে ফোন দিয়ে জানতে পারে সেখানে রাত ৮টা। ঢাকা ৯০° পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত হওয়ায় ফারিন বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে থাকে।

ক. কেন্দ্রমণ্ডল পৃথিবীর মোট ওজনের কত ভাগ?

খ. সমাক্ষরেখা কী? ব্যাখ্যা কর।

গ. শিমু যেখানে অবস্থান করছে তার দ্রাঘিমা নির্ণয় কর।

ঘ. ‘ফারিন ও সানার সময় একই হওয়া যুক্তিযুক্ত।’- উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

৪. সায়েম চট্টগ্রাম থেকে দিনাজপুর চলে আসে বাবার চাকরির সুবাদে। বন্ধু ইমতিয়াজ চট্টগ্রাম থেকে ফোন দিয়ে জানায় সে এখন ইফতার করছে। কিন্তু দিনাজপুর থেকে সায়েম বলে তার এখনো ইফতারের সময় বাকি রয়েছে।

ক. গ্রিনিচের দ্রাঘিমা কত ডিগ্রী?

খ. আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বলতে কী বোঝ?

গ. সায়েম ও ইমতিয়াজের একই সময়ে ইফতার না করার কারণ কী? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. একই কারণে কি গ্রিনিচ থেকে বাংলাদেশের সময় ৬ ঘণ্টা অগ্রগামী? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

৫. প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিচ্ছিল মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার। জাপান থেকে আমেরিকার উদ্দেশে যাচ্ছিল তাদের জাহাজ। কিছুদূর যাওয়ার পর জাহাজের ঘড়ির সময় একদিন কমিয়ে দেওয়া হলো। জাহাজ প্রশান্ত মহাসাগরে ভাসমান।

ক. পৃথিবীর গতি কত প্রকার?

খ. সময় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কাল্পনিক রেখার ভূমিকা কী?

গ. জাহাজের ঘড়িতে সময় কমানোর কারণটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘জাহাজের ঘড়িতে সময় সমন্বয় করা যুক্তিসঙ্গত।’-উক্তিটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর।

৬. সম্প্রতি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আমাদের সৌরজগতের খুব কাছে পানি সমৃদ্ধ এক গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন। এ গ্রহটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘জিজে ১২১৪বি’ এ গ্রহটি যে নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে সেটি থেকে এটির দূরত্ব প্রায় ১০.৮ কোটি কিলোমিটার। এ গ্রহটির নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরে আসতে সময় লাগে ২২৫ দিন। ধারণা করা হচ্ছে এ গ্রহটিতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন রয়েছে। অবশ্য এ গ্রহটির একটি উপগ্রহও রয়েছে।

ক. সূর্যের উপরিভাগের উষ্ণতা কত?

খ. গ্রহাণুপুঞ্জ বলতে কী বোঝ?

গ. আবর্তনগত দিক থেকে সৌরজগতের যে গ্রহটির সাথে উল্লিখিত গ্রহটির মিল রয়েছে সে গ্রহটি সম্পর্কে ধারণা দাও?

ঘ. পৃথিবীর সাথে উল্লিখিত গ্রহটির সাদৃশ্য বৈসাদৃশ্য দেখাও।

৭. ঘটনা- ১ঃ প্রিয়ন্ত মাগরিবের নামাজের পর পশ্চিম আকাশে একটি তার দেখতে পায়। ফজরের নামাজর পর সে দেখতে পায় উক্ত তারাটি পূর্বদিকে অবস্থান করছে।

ঘটনা-২ঃ রোহান জানুয়ারি মাসে দেখতে পেল সূর্য অস্ত যাচ্ছে সন্ধ্যা ৫:২০ মিনিটে। আবার জুলাই মাসে লক্ষ করল, সন্ধ্যা ৬:৪৫ মিনিটে সূর্য অস্ত যাচ্ছে

ক. সৌর কলঙ্ক কাকে বলে?

খ. ভূ-অভ্যন্তরের একটি স্তর ব্যাখ্যা কর।

গ. প্রিয়ন্তের দেখা তারাটির বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।

ঘ. জানুয়ারি ও জুলাই মাসে সূর্য অস্ত যাওয়ার সময়ের ভিন্নতার কারণ বিশ্লেষণ কর।

৮. শিহাব সন্ধ্যার আকাশে একটি তারাকে জ্বলজ্বল করতে দেখল। যে মামার কাছে জানল- এটি তারা নয়। এটি আমাদের নিকটবর্তী গ্রহ। মাম আরও বলেন, সৌরজগতে একটি আশ্চর্য গ্রহ রয়েছে, যার তিনটি বলয় আছে।

ক. নিরক্ষরেখা কাকে বলে?

খ. সময় নির্ণয়ে কাল্পনিক রেখার ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

গ. শিহাবের দেখা গ্রহটির বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।

ঘ. শিহাবের মামার বিবৃত শেষোক্ত গ্রহটির বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ কর।

 অনুশীলনের জন্য আরও প্রশ্ন-

প্রশ্ন- আলম একটি রেখাপথ খুঁজে পেয়েছেন যা জলপ্রবাহের ওপর দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত বিস্তৃত। এটা একটি আঁকা-বাকা পথ। এই পথটি পৃথিবীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ক. ওজোন স্তরের গভীরতা কত?

খ. ভূ-ত্বক কী? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পথটির বৈশিষ্ট্য লেখো।

ঘ. “এই রেখা পথটি পৃথিবীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ”- কেন? পাঠ্যবইয়ের আলোকে ব্যাখ্যা করো।

স্বাধীন বাংলাদেশ অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন

প্রশ্ন- মিঠ নিয়মিত রোজা রাখে। কিন্তু রোজার মাস জুন মাসে হওয়ায় মাগরিবের আযান দেরিতে দেয়। মিঠু চিন্তা করলো রোজার মাস যদি ডিসেম্বর মাসে হতো। বরগুনা জিলা স্কুল।

ক. আহ্নিক গতি কাকে বলে?

খ. বার্ষিক গতি ব্যাখ্যা করো।

গ. মিঠুর চিন্তার সাথে পাঠ্যপুস্তকের কোন ধারণা মিল পাওয়া যায়। ৩

ঘ. এর সাথে কি ঋতু পরিবর্তনের সম্পর্ক আছে? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

প্রশ্ন- তোমার ক্লাশের মনিরুল একজন জ্ঞান পিপাসু শিক্ষার্থী। স্কুলে শিক্ষকের কাছে সে ভূ-অভ্যন্তরের গঠন সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষক তাকে ভূত্বক, গুরুমণ্ডল, কেন্দ্রমণ্ডল, সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন।

ক. কেন্দ্রাতিগ শক্তি কী?

খ. শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা কী? ব্যাখ্যা করো?

গ. উদ্দীপকের কেন্দ্রমণ্ডল সম্পর্কে আলোচনা করো।

ঘ. আমাদের জন্য বসবাস উপযোগী গ্রহ কোনটি এবং কেন? ব্যাখ্যা করো।

প্রশ্ন- ইয়ামিন তারা দেখতে বেশ ভালোবাসে। সে প্রতিদিনই ভোর বেলা ও রাতে তারা দেখতো। আর এই আগ্রহ দেখে তার বাবা তাকে একটা টেলিস্কোপ উপহার দিলেন। এই তারা দেখার মধ্যে ইয়ামিন খেয়াল করলো যে, ভোরবেলা ও সন্ধ্যাবেলা একটা উজ্জ্বল তারা পূর্ব ও পশ্চিম আকাশে দেখা যায়। তারাটি নিয়ে ইয়ামিন ভাবতে শুরু করল।

ক. কেন্দ্রাতিগ বা কেন্দ্রাভিমুখী শক্তি কী?

খ. আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বলতে কী বোঝ?

গ. উদ্দীপকে যে তারার কথা বলা হয়েছে- সেটি আসলে কী? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ইয়ামিনের দেখা তারার সাথে পৃথিবীর তুলনামূলক আলোচনা কর।

প্রশ্ন- মিতা গ্রীষ্মের ছুটিতে নোয়াখালীর হাতিয়ায় বেড়াতে যায়। মিতা যে বাড়িতে উঠে তার পাশ দিয়েই একটি নদী বয়ে গেছে। সে লক্ষ করে, এক সময় নদীটি পানিতে কানায় কানায় ভরে যায় আবার নির্দিষ্ট সময় পরে পানি অনেক নীচে নেমে যায়।

ক. দ্রাঘিমাংশ কাকে বলে?

খ. স্থানীয় সময় বলতে কী বোঝায়?

গ. মিতার দেখা ঘটনাটির কারণ ব্যাখ্যা কর।

ঘ. বাংলাদেশের ওপর উক্ত ঘটনার প্রভাব বিশ্লেষণ কর।

প্রশ্ন-সেজুতি যখন জাকার্তা বিমানবন্দর ত্যাগ করে তখন সেখানকার ঘড়িতে সময় ছিল সকাল ৯টা। ৩ ঘন্টা টানা বিমানে থাকার পর ঢাকা বিমানবন্দরে ঘড়িতেও দেখে সকাল ৯টা। অনেকটা অবাক হয়ে চট্টগ্রামে তার বন্ধু ফারিনকে ফোন দিলে সে জানায় তার ঘড়িতেও সকাল ৯টা।

ক. সৌরজগতের গ্রহ কতটি?

খ. ট্রপোপস দিয়ে বিমান চলাচল করার কারণ কী?

গ. ঢাকা ও জাকার্তার দ্রাঘিমার ব্যবধান কত?

ঘ. ঢাকা বিমানবন্দরের ঘড়িতে সময় ও ফারিন এর ঘড়ির সময় একই হওয়া কি যৌক্তিক? তোমার মতামত দাও।

উত্তর- ক) সৌর জগতের গ্রহ ৮টি।

খ) ট্রপোমণ্ডল ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন স্তর বা বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তর। ট্রপোমণ্ডলের ঊর্ধ্বসীমাকে ট্রপোপস বলে। ট্রপোপসের গভীরতা সরু, এখানে বায়ু স্থির এবং ঝড় বৃষ্টির প্রাদুর্ভাব না থাকায় বিমান এ স্তর দিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করে।

প্রশ্ন- পৃথিবী ক্রমশ ঘুরছে, এর ফলে পৃথিবী প্রথমে নিজ অক্ষে আবর্তন করে এবং সাথে সাথে সূর্যকে পরিক্রমণ করে। প্রথমটির নাম দিতে পারি আমরা ‘ক’ গতি এবং দ্বিতীয়টির নাম দিতে পারি আমরা ‘খ’ গতি।

ক. পৃথিবীর একটি পূর্ণ আবর্তনের সময়কে কী বলে?

খ. দিবা-রাত্রি সংঘটিত হওয়ার পরীক্ষাটি বর্ণনা কর।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘ক’ গতির ফলে পৃথিবীতে কী কী পরিবর্তন সংঘটিত হয়? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘খ’ গতির ফলে কীভাবে আমরা আবহাওয়ার পরিবর্তনের মাধ্যমে বৈচিত্র্যময় জীবনযাপন করি? বিশ্লেষণ কর।

প্রশ্নের উত্তর- ক) পৃথিবীর একটি পূর্ণ আবর্তনের সময়কে সৌরদিন বলে।

খ) একটি অন্ধকার ঘরে টেবিলের ওপর জ্বলন্ত মোমবাতিকে সূর্য এবং ভূগোলককে পৃথিবী ধরে জ্বলন্ত মোমবাতির সামনে ভূগোলকটি ঘুরালে দেখা যাবে বাতির সম্মুখের অংশ আলোকিত এবং তার বিপরীত অংশ অন্ধকারে থাকে। আলোকিত অংশে দিন এবং অন্ধকার অংশে রাত হয়। পৃথিবীর আলোকিত ও অন্ধকার অংশের মধ্যবর্তী বৃত্তাকার অংশকে ছায়াবৃত্ত বলে। আবর্তনের ফলে পৃথিবীর যে অংশ অন্ধকার থেকে ছায়াবৃত্ত পার হয়ে সবেমাত্র আলোকিত অংশে পৌঁছায় সেখানে প্রভাত হয়।

সৌরজগত ও ভূমণ্ডল অধ্যায়ের অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন- প্রতি বছরের মতো এ বছরও ঢাকার সেন্ট যোসেফ স্কুলে বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ বছর মেলার বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে পেরিস্কোপের মাধ্যমে মহাকাশ দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। ওই স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিশাদ পেরিস্কোপের মাধ্যমে মহাকাশের এমন একটি গ্রহ দেখতে পেল যার চারদিকে তিনটি উজ্জল আলোর বলয় রয়েছে।

ক. ঢাকার প্রতিপাদ স্থান কোথায়?

খ. কোনো স্থানে মধ্যাহ্ন হলে তার ১০ পূর্বের স্থানের সময় কত?

গ. নিশাদ পেরিস্কোপে কোন গ্রহটি দেখেছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উক্ত গ্রহে কি প্রাণী ও উদ্ভিদের বাসযোগ্য পরিবেশ রয়েছে? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

প্রশ্নের উত্তর-

ক) দক্ষিণ আমেরিকার অন্তর্গত চিলির নিকট প্রশান্ত মহাসাগরে ঢাকার প্রতিপাদ স্থান অবস্থিত।

খ) কোনো স্থানে মধ্যাহ্ন হলে তার ১০ পূর্বের স্থানে সময় হবে বেলা ১২টা ৪ মিনিট।পৃথিবী গোলাকার এবং নিজ অক্ষ বা মেরুরেখায় পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে আবর্তন করছে। ফলে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থান ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সূর্যের সামনে উপস্থিত হচ্ছে। যে সময়ে কোনো স্থানের মধ্যরেখা সূর্যের ঠিক সামনে আসে, তখন ঐ স্থানে দুপুর হয় অর্থাৎ ১২টা বাজে। সাধারণত পৃথিবীর আবর্তনের গতি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে হওয়ায় সকল পূর্বদিকের স্থানে আগে সূর্যোদয় হয়। এ কারণে কোনো স্থানের পূর্বদিকে ঐ স্থানের চেয়ে সময় বেশি হবে এবং পশ্চিম দিকে কম হবে। প্রত্যেক ১০ কে ৪ মিনিট হিসাব করা হয়। এ কারণেই কোনো স্থানের বেলা ১টার সময় ঐ স্থানের ১০ পূর্ব দিকের স্থানের সময় বেলা ১২টা ৪ মিনিট হয়।

গ) উদ্দীপকের রিশাদ পেরিস্কোপে শনি গ্রহটি দেখতে পেয়েছে।শনি সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ। সূর্য থেকে শনির দূরত্ব প্রায় ১৪৩ কিলোমিটার। শনি ২৯ বছর ৫ মাসে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে এবং ১০ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে নিজ অক্ষে একবার আবর্তন করে।শনি পৃথিবী থেকে প্রায় ৯ গুণ বড় এবং খালি চোখে এটি দেখা যায়। শনির বায়ুমণ্ডলে হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মিশ্রণ, মিথেন ও অ্যামোনিয়া গ্যাস রয়েছে। এছাড়া তিনটি উজ্জ্বল বলয় শনিকে বেষ্টন করে আছে। শনির মোট ২২টি উপগ্রহ রয়েছে। এর মধ্যে ক্যাপিটাস, টেসিস, মহুয়া, টাইটান প্রধান উপগ্রহ।

ঘ) না, শনি গ্রহে প্রাণী ও উদ্ভিদের বাসযোগ্য পরিবেশ নেই। নিচে উত্তরের পক্ষে যুক্তি দেওয়া হলো- আমরা জানি, সৌরজগতের ৮টি গ্রহের মধ্যে একমাত্র পৃথিবীই জীবজন্তু ও উদ্ভিদের জীবনধারণের জন্যে আদর্শ গ্রহ। পৃথিবীতেই একমাত্র প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের সুষ্ঠুভাবে বসবাসের পরিবেশ রয়েছে।। শনি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে কেবল হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মিশ্রণ, মিথেন ও অ্যামোনিয়া গ্যাস রয়েছে। শুধু এসব গ্যাসের উপস্থিতিতে প্রাণ ধারণ করা সম্ভব নয়। প্রাণ ধারণ করার জন্যে যে বায়ুমণ্ডলের উপস্থিতি প্রয়োজন শনি গ্রহে তা না থাকায় সেখানে উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবনধারণ অসম্ভব।

প্রশ্ন- সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীর চারটি অবস্থান থেকে ঋতু পরিবর্তনের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সেগুলো হলো- ২১ জুন, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২২ ডিসেম্বর ও ২১ মার্চ।

ক. সৌরদিন কাকে বলে?

খ. কেন্দ্রাতিগ শক্তি কীভাবে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টিতে সহায়তা করে?

গ. ২১ জুন তারিখে পৃথিবীর অবস্থান চিত্রসহ ব্যাখ্যা করো।

ঘ. ২৩ সেপ্টেম্বর ও ২২ ডিসেম্বর পৃথিবীর অবস্থান বাংলাদেশের ঋতু পরিবর্তনে কী প্রভাব ফেলবে? বিশ্লেষণ করো।

প্রশ্নের উত্তর-

ক) পৃথিবীর নিজ অক্ষে বা মেরুরেখায় পশ্চিম থেকে পূর্বে একটি পূর্ণ আবর্তনকে এক সৌরদিন বলে।

খ) পৃথিবী তার অক্ষ থেকে চারদিকে দ্রুতবেগে ঘুরছে বলে তার পৃষ্ঠ থেকে তরল পানিরাশি চতুর্দিকে ছিটকে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। একেই কেন্দ্রাতিগ শক্তি বলে। পৃথিবী ও চন্দ্রের আবর্তনের জন্যে ভূপৃষ্ঠের তরল ও হালকা জলরাশির ওপর কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাব অধিক হয়। এর ফলেই জলরাশি সর্বদা বাইরে নিক্ষিপ্ত হয় এবং তরল জলরাশি কঠিন ভূ- ভাগ হতে বিচ্ছিন্ন হতে চায়। এমনিভাবে কেন্দ্রাতিগ শক্তি জোয়ার-ভাটা সৃষ্টিতে সহায়তা করে।

গ) ২১ জুন তারিখে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল থাকে।২১ জুন সূর্যের উত্তরণের শেষ দিন। এই দিন সূর্যরশ্মি কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর লম্বভাবে পতিত হয়। ফলে ঐ দিন এখানে দীর্ঘতম দিন ও ক্ষুদ্রতম রাত হয়। ২১ জুনের দেড় মাস পূর্ব থেকে দেড় মাস পর পর্যন্ত মোট তিনমাস উত্তর গোলার্ধে উত্তাপ বেশি থাকে। এ সময় উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল। এ সময়ে সূর্যের তীর্যক কিরণের জন্য দক্ষিণ গোলার্ধে দিন ছোট ও রাত বড় হয় বলে সেখানে তখন শীতকাল।

ঘ) উদ্দীপকে পৃথিবীর বার্ষিক গতির কারণে ঋতু পরিবর্তনের কথা বলা ও হয়েছে। বছরের চারটি নির্দিষ্ট সময়ে পৃথিবীর অবস্থান থেকে ঋতু পরিবর্তনের সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি দিন হলো ২১ জুন। ২১ জুন তারিখে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল থাকে। ২৩ সেপ্টেম্বর ও ২২ ডিসেম্বর পৃথিবীর অবস্থান বাংলাদেশের ঋতু পরিবর্তনে যে ধরনের প্রভাব ফেলবে তা নিম্নরূপ- ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখে নিরক্ষরেখার ওপর লম্বভাবে সূর্যরশ্মি পতিত হয় এবং দিন ও রাত সমান থাকে। এ কারণে ঐ তারিখে দেড় মাস পূর্ব ও দেড় মাস পর পর্যন্ত উত্তাপ মধ্যম ধরনের থাকে। তাই এ সময় উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বসন্তকাল বিরাজমান থাকে। ২২ ডিসেম্বর তারিখে সূর্যের দক্ষিণায়নের শেষ দিন। অর্থাৎ এই দিনে সূর্য মকরক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে কিরণ দেয়। ফলে সেখানে দিন বড় ও রাত ছোট হয়। তাই এ তারিখের দেড় মাস পূর্বে ও দেড় মাস পরে দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও উত্তর গোলার্ধে শীতকাল বজায় থাকে। – বাংলাদেশের অবস্থান উত্তর গোলার্ধে হওয়ার ফলে, ২৩ সেপ্টেম্বর ও ২২ ডিসেম্বরের পৃথিবীর অবস্থানের প্রভাবে বাংলাদেশে যথাক্রমে – শরৎকাল এবং শীতকাল বিরাজ করবে।অতএব, ওপরের আলোচনা হতে সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, পৃথিবীর বার্ষিক গতির ফলে ঋতু পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশেও বিরাজমান।

প্রশ্ন-জনাব মাসুদ ভূগোলের শিক্ষক। তিনি ক্লাসে সৌরজগত ও ভূমণ্ডল অধ্যায় পড়াতে গিয়ে জোয়ার-ভাটা বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, নদীমাতৃক দেশ হিসেবে জোয়ার-ভাটার প্রভাব বাংলাদেশের মানবজীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

ক. অক্ষাংশ কাকে বলে?

খ. প্রতিপাদ স্থান বলতে কী বোঝ?

গ. জোয়ার-ভাটার কারণ ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকের শেষোক্ত উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

প্রশ্নের উত্তর-

ক) নিরক্ষ রেখার উত্তর-দক্ষিণে কল্পিত রেখাকে অক্ষাংশ বলা হয়।

গ) উদ্দীপকে বর্ণিত জোয়ার-ভাটার প্রধান কারণ হলো কেন্দ্রাতিগ শক্তি ও চন্দ্র-সূর্যের আকর্ষণ।সমুদ্র ও এর উপকূলবর্তী নদীর জলরাশির ক্ষেত্রে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর উচ্চতার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। জলরাশির এভাবে বৃদ্ধি পাওয়াকে জোয়ার ও হ্রাস পাওয়াকে ভাটা বলে। প্রাচীনকালে জোয়ার- ভাটা হওয়ার কারণ হিসেবে বিভিন্ন অবাস্তব ধারণা প্রচলিত ছিল। কিন্তু, বিজ্ঞানীরা জোয়ার-ভাটার সৃষ্টির ক্ষেত্রে দুটি বৈজ্ঞানিক কারণের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। একটি হলো কেন্দ্রাতিগ শক্তি। পৃথিবী তার নিজ অক্ষের ওপর আবর্তন করায় যে গতির সৃষ্টি হয় তাই কেন্দ্রাতিগ শক্তি। এ শক্তির কারণে জলরাশি কঠিন ভূ-ভাগ হতে বিচ্ছিন্ন হতে চায়। ভূ-পৃষ্ঠের যে অঞ্চলের পানি স্ফীত হয়ে বিচ্ছিন্ন হতে চায়, সেখানে জোয়ারের সৃষ্টি হয়। আর তার বিপরীত স্থানে হয় ভাটা। তবে জোয়ার-ভাটার সবচেয়ে | গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো চন্দ্র-সূর্যের আকর্ষণ। মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু পরস্পরকে কমবেশি আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণের ফলেই পৃথিবী সূর্যের চারদিকে এবং চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। চাঁদ ও সূর্য ভূ- পৃষ্ঠের জলভাগকে অবিরাম আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণ জলরাশির যে অংশে বেশি থাকে সেখানে পানি ফুলে ওঠে অর্থাৎ সেখানে জোয়ারের সৃষ্টি হয়। আর বিপরীত দিকে পানি হ্রাস পাওয়ায় সেখানে ভাটার সৃষ্টি হয়। পৃথিবীতে প্রতিদিন দুই বার করে জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয়। ওপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ শক্তি এবং চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ দুটিই জোয়ার-ভাটার জন্য দায়ী।

ঘ) উদ্দীপকে আলোচ্য বিষয়টি জোয়ার-ভাটার ঘটনাকে নির্দেশ করেছে যার প্রভাব বাংলাদেশের মানবজীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পৃথিবীর ওপর চন্দ্রের আকর্ষণে জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের জলবায়ু কৃষির জন্য খুবই উপযোগী। কেননা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অসংখ্য নদী বয়ে গেছে যেগুলো দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। এ সকল নদীতে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টি হয়।বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ওপর এ জোয়ার-ভাটার প্রভাব প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয়ভাবেই প্রতীয়মান হয়।জোয়ারের সময় নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রগামী বড় বড় জাহাজ অনায়াসেই নদীতে প্রবেশ করে, আবার ভাটার টানে সমুদ্রে চলে আসে।বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে জোয়ারের সময় নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পেলে বড় বড় জাহাজগুলো বন্দরে প্রবেশ করে বা বন্দর ছেড়ে যায়। জোয়ারের সময় সমুদ্রের পানিকে আবদ্ধ করে শুকিয়ে লবণ তৈরি করা হয়। ভরা কটালের অনেক সময় সমুদ্রের পানি প্রবল তরঙ্গে নদীর মোহনা দিয়ে স্থলভাগের মধ্যে প্রবেশ করে বানের সৃষ্টি করে।বাংলাদেশের বর্ষাকালে অমাবস্যায় জোয়ারে প্রবল বান হতে দেখা যায়।আমাদের দেশে মেঘনা, ভাগীরথী নদীতে এরূপ বান দেখা যায়। পূর্ব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে কখনো কখনো এই বানে নৌকা, স্টিমার, জাহাজসহ জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

পরিশেষে, বাংলাদেশের ওপর জোয়ার-ভাটার প্রভাব অপরিসীম।

প্রশ্ন- দীপ্ত তার মামার সাথে ঢাকা থেকে একটি বিমানে আমেরিকা যাচ্ছিল। বিমানটি প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝ বরাবর একটি কাল্পনিক রেখা অতিক্রম করছিল। তখন দীপ্তর মামা বললেন, এবার আমরা বর্তমান সময়ের সঙ্গে এক দিন যোগ করব। কেননা, ঐ কাল্পনিক রেখা দ্বারা আমরা স্থানীয় সময় যথার্থভাবে নির্ণয় করতে পারি।

ক. গ্রিনিচ মান মন্দির কোথায় অবস্থিত?

খ. পৃথিবীতে স্থানভেদে সময়ের পার্থক্য ঘটে কেন?

গ. অনুচ্ছেদে কোন কাল্পনিক রেখার ইঙ্গিত রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উক্ত কাল্পনিক রেখা সময় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কতটুকু তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে? তোমার পাঠের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

প্রশ্নের উত্তর-

ক) গ্রিনিচ মান মন্দির যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরে অবস্থিত।

খ) পৃথিবী গোলাকার এবং পৃথিবী নিজ অক্ষ বা মেরুরেখার চারদিকে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অনবরত আবর্তন করছে। ফলে ভূ-পৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থান ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সূর্যের সামনে উপস্থিত হয়। অর্থাৎ একই সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের অবস্থান সূর্যের সাপেক্ষে বিভিন্ন হয়। তাই পৃথিবীতে স্থানভেদে সময়ের পার্থক্য ঘটে।

গ) অনুচ্ছেদে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কোনো নির্দিষ্ট স্থান থেকে পূর্ব বা পশ্চিমে দীর্ঘপথ ভ্রমণ করার সময় স্থানীয় সময়ের পার্থক্যের সঙ্গে সঙ্গে সপ্তাহের দিন বা বার নিয়েও গরমিল হয়। এ অসুবিধা দূর করার জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির মাধ্যমে প্রশান্ত মহাসাগরের জলভাগের ওপর মানচিত্রে ১৮০ ডিগ্রী দ্রাঘিমারেখাকে অবলম্বন করে একটি রেখা কল্পনা করা হয়েছে। এটিই আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা। গ্রিনিচ থেকে পূর্বগামী কোনো জাহাজ বা বিমান এ রেখা অতিক্রম করলে স্থানীয় সময়ের সঙ্গে মিল রাখার জন্য তাদের বর্ধিত সময় থেকে একদিন বিয়োগ করে এবং পশ্চিমগামী জাহাজ বা বিমান তাদের কম সময়ের সঙ্গে একদিন যোগ করে তারিখ গণনা করে থাকে। উদ্দীপকে দেখা যায়, দীপ্ত তার মামার সাথে আমেরিকা যাওয়ার সময় বিমানটি প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝ বরাবর একটি কল্পিত রেখা অতিক্রম করে। এই রেখা অতিক্রম করার ফলে দীপ্তর মামা বর্তমান সময়ের সাথে একদিন যোগ করার কথা বলে যা ওপরে বর্ণিত আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার বর্ণনার সাথে মিলে যায়। সুতরাং বলা যায় অনুচ্ছেদে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

ঘ) উক্ত কাল্পনিক রেখা সময় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।উদ্দীপকে প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর দিয়ে অঙ্কিত কাল্পনিক রেখা বলতে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কোনো নির্দিষ্ট স্থান থেকে পূর্ব বা পশ্চিমে ১৮০ ডিগ্রী দ্রাঘিমা রেখা অতিক্রম করলে স্থানীয় সময়ের পার্থক্যের সঙ্গে সঙ্গে দিন বা বার নিয়েও গরমিল হয়। এ সমস্যা দূর করার জন্যই আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা কল্পনা করা হয়। আমরা জানি, ১ ডিগ্রী দ্রাঘিমান্তরে ৪ মিনিট সময়ের ব্যবধান হয়।এভাবে মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্বদিকে অগ্রসর হতে থাকলে ১৮০ ডিগ্রী দ্রাঘিমায় ১২ ঘণ্টা সময় বেশি হয় এবং পশ্চিম দিকে অগ্রসর হলে ১৮০ ডিগ্রী দ্রাঘিমায় ১২ ঘণ্টা সময় কম হয়। সুতরাং মূলমধ্যরেখায় যখন সোমবার সকাল ১০টা তখন ১৮০ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমায় স্থানীয় সময় সোমবার রাত ১০টা। এভাবে আবার ঠিক পশ্চিম দিক দিয়ে দ্রাঘিমা গণনা করলে ১৮০ ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমায় স্থানীয় সময় হবে রবিবার রাত ১০টা। কিন্তু ১৮০ ডিগ্রী পূর্ব ও ১৮০ ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমা মূলত একই রেখা। সুতরাং দেখা যায় একই দ্রাঘিমায় স্থানীয় সময়ের পার্থক্য হচ্ছে ২৪ ঘণ্টা বা একদিন। অর্থাৎ একই স্থানে কোথাও রবিবার কোথাও সোমবার। কিন্তু একই দ্রাঘিমায় একই সঙ্গে রবিবার রাত ১০ টা ও সোমাবার রাত ১০টা হতে পারে না। এ অসুবিধা দূর করার জন্য – আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার প্রয়োজন হয়। সুতরাং ওপরের আলোচনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, আন্তর্জাতিক = তারিখ রেখা সময় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এ্যানিমেল সায়েন্স-১ এর প্রশ্ন