কর্তৃত্ব ও দায়িত্বের ভারসাম্য বিধান করতে হয় কেন?

উদ্দীপকঃ-

বর্তমানে প্রতিনিয়তই ব্যবসায় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বাড়ছে।উত্তরা মটরস-এর উৎপাদন ব্যবস্থাপক জনাব রাজন এ বিষয়টি লক্ষ রেখেই তাদের পণ্যের মধ্যে নতুন একটি প্রযুক্তি যুক্ত করলেন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পরিবর্তে সৌর বিদ্যুৎচালিত অটোরিকশা বাজারজাত করেন। চাহিদা বাড়ায় তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সৌর বিদ্যুৎচালিত অটোরিকশা সরবরাহ করার উদ্যোগ নেন। তবে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থাকায় জনাব রহিমের প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ক. হেনরি ফেয়ল ব্যবস্থাপকের কয়টি গুণের কথা উল্লেখ করেন?

খ. কর্তৃত্ব ও দায়িত্বের ভারসাম্য বিধান করতে হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকে জনাব রাজনের মধ্যে আদর্শ ব্যবস্থাপকের কোন গুণটি বিদ্যমান? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. জনাব রাজনের দক্ষ ব্যবস্থাপনা সত্ত্বেও উদ্দীপকে উল্লিখিত পরিস্থিতি প্রতিষ্ঠানের ওপর প্রভাব বিশ্লেষণ করো।

 

উত্তরঃ-

ক) হেনরি ফেয়ল (Henri Fayol) ব্যবস্থাপকের ৬টি গুণের কথা উল্লেখ করেন।সহায়ক তথ্যঃ- ব্যবস্থাপকের ছয়টি গুণ হলো ১. স্বাস্থ্য ও শারীরিক সক্ষমতা; ২. বুদ্ধিমত্তা ও মানবিক শক্তি; ৩. নৈতিক গুণাবলি; ৪. সাধারণ শিক্ষা; ৫. বাণিজ্যিক ও কারিগরি জ্ঞান; ৬. বিশেষ জ্ঞান প্রভৃতি।

 

খ) কর্তৃত্ব (authority) হলো আদেশ দেয়ার বৈধ ক্ষমতা। আর দায়িত্ব (responsibility) হলো কাজ সম্পাদন করার বাধ্যবাধকতা বা কর্তব্য।আদেশ দেওয়ার অধিকার ও কাজের বাধ্যবাধকতায় সমতা রক্ষা করার নীতিই হলো কর্তৃত্ব ও দায়িত্বে সমতা রাখা। কর্তৃত্ব ভার্পণের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কর্মীর ওপর কাজের’ দায়িত্বও অর্পিত হয়। কর্তৃত্ব বেশি হলে এর অপব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার দায়িত্ব বেশি দিলে কর্তৃত্বের অভাবে কাজ সম্পাদনে সমস্যা হয়। এজন্য কর্তৃত্ব ও দায়িত্বের মধ্যে ভারসাম্য বিধান করতে হয়।

 

গ) উদ্দীপকে জনাব রাজনের মধ্য আদর্শ ব্যবস্থাপকের উদ্ভাবনী (Innovative) গুণটি বিদ্যমান।ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য উদ্ভাবনী শক্তি গুণটি প্রয়োজন হয়। নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও ব্যবসায়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সহজ হয়। বর্তমান ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার যুগে সর্বত্রই নতুনত্ব ও প্রযুক্তির উন্নয়ন চলছে। তাই যেকোনো ব্যবস্থাপকের মধ্যে এ গুণটি থাকা আবশ্যক।উদ্দীপকে উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রতিনিয়তই ব্যবসায় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। উত্তরা মটরস-এর উৎপাদন ব্যবস্থাপক জনাব রাজন এ বিষয়টি লক্ষ রেখেই তাদের প্রতিষ্ঠানের পণ্যের মধ্যে নতুন একটি প্রযুক্তি যুক্ত করলেন। তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পরিবর্তে সৌর বিদ্যুৎচালিত অটোরিকশা সরবরাহ করার উদ্যোগ নেন। এসব কাজ মূলত উদ্ভাবনী গুণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, জনাব রাজনের মধ্যে আদর্শ ব্যবস্থাপকের উদ্ভাবনী গুণটিই বিদ্যমান।

 

ঘ) উদ্দীপকের জনাব রাজনের দক্ষ ব্যবস্থাপনা সত্ত্বেও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠানটির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে অন্যতম একটি সমস্যা। এ কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানে অসন্তোষজনক কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়। ফলে ধর্মঘট, হরতাল, অবরোধ ইত্যাদি সৃষ্টি হয়। এতে ব্যবস্থাপনার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।উদ্দীপকের জনাব রাজন একজন ব্যবস্থাপক। তিনি প্রতিযোগিতার সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করেন। তিনি উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে তার উদ্ভাবিত সৌর বিদ্যুৎচালিত অটোরিকশা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থাকায় তার প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে যেকোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাজেই বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এজন্য জনাব রাজনের উদ্ভাবিত নতুন পণ্যের অধিক চাহিদা থাকলেও তিনি তা দেশের সব স্থানে সরবরাহ করতে পারছেন না। কারণ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা পরিবহন ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি বাধার সৃষ্টি করে। ফলে কোনো প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য যথাসময়ে অন্যত্র সরবরাহ করা যায় না। বাধ্য হয়েই তাদের প্রতিষ্ঠানের এরূপ কাজ বন্ধ রাখতে হয়। এতে প্রতিষ্ঠানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই জনাব রাজন দক্ষ ব্যবস্থাপক হওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ব্যবসায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

 

উদ্দীপকঃ-

তাজরীন ফ্যাশন-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রতিষ্ঠানের কাজগুলোকে আলাদা আলাদা না করে বিচ্ছিন্নভাবে সম্পাদন করার ফলে যথাসময়ে মানসম্পন্ন উৎপাদনকার্য সম্পন্ন হয় না। কর্মীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ না থাকায় প্রয়োজনীয় সময়ের মধ্যে তারা কাজ শেষ করতে পারে না। প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যার্জনে তাজরীন ফ্যাশনের কর্মীদের হাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দিয়ে দায়িত্ব দিতে আগ্রহী।

ক. শৃঙ্খলার নীতি কী?

খ. বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার মূলনীতিগুলো ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকে তাজরীন ফ্যাশন-এর যথাসময়ে উৎপাদনকার্য সম্পন্ন না হওয়ার পিছনে ব্যবস্থাপনার কোন নীতিটি লঙ্ঘিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. তাজরীন ফ্যাশন-এর ভবিষ্যৎ সফলতা অর্জনে কর্মীদের ক্ষমতাসহ দায়িত্ব প্রদান সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত কতটুকু যুক্তিযুক্ত? মতামত দাও।

 

প্রশ্নের উত্তরঃ-

ক) যোগ্য ব্যক্তিকে সঠিক পদে পদায়ন এবং সঠিক বস্তুকে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপনকেই শৃঙ্খলার নীতি বলে।

খ) পরিকল্পিত রীতি-নীতি ও কলাকৌশলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের শ্রম ও উৎপাদন বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা বলে। ফ্রেডারিক উইন্সলো টেলর (Frederick Winslow Taylor) বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার নীতি আবিষ্কার করেছেন। তার নীতিগুলো নিম্নরূপ:

১. সঠিকভাবে কর্মী নির্বাচন, প্রশিক্ষণদান ও তাদের উন্নয়ন;

২. শ্রম-ব্যবস্থাপনা সৌহার্দ্যপূর্ণ করা;

৩. কর্মীদের মধ্যে দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুষ্ঠু বণ্টন প্রভৃতি।

 

গ) কার্যবিভাজন নীতি লঙ্ঘনের ফলে উদ্দীপকে তাজরীন ফ্যাশন-এর যথাসময়ে উৎপাদন কার্য সম্পন্ন হয়নি।এই নীতিতে প্রতিষ্ঠানের কাজকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন (উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয়) ভাগে ভাগ করা হয়। এরপর প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব সুস্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করা হয়। এতে কর্মীরা তাদের কাজ, কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা বুঝে নিয়ে সেভাবে কাজ করতে পারে। ফলে তাদের কর্মদক্ষতাও বাড়ে। এ নীতি অনুসরণ না করলে কাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।উদ্দীপকে তাজরীন ফ্যাশন-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রতিষ্ঠানের কাজগুলোকে আলাদাভাগে ভাগ করেননি। কাজগুলো বিচ্ছিন্নভাবে করা হয়। এতে যথাসময়ে মানসম্পন্ন উৎপাদন কাজ সম্পন্ন হয় না। এর ফলে প্রশাসনিক কাজ জটিল হয়। কর্মীরাও সর্বোচ্চ দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে না। এসব বৈশিষ্ট্য ব্যবস্থাপনার কার্য বিভাজন নীতির লঙ্ঘনের সাথে সম্পর্কিত। তাই বলা যায়, তাজরীন ফ্যাশনে এ নীতিটিই লঙ্ঘিত হয়েছে।

ঘ) উদ্দীপকে তাজরীন ফ্যাশন-এর ভবিষ্যৎ সফলতা অর্জনে বিকেন্দ্রীকরণ নীতির মাধ্যমে কর্মীদের ক্ষমতাসহ দায়িত্ব প্রদানের সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক বলে আমি মনে করি। বিকেন্দ্রীকরণের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপকদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়। কর্মীরাও আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে আগ্রহী হয়। উদ্দীপকে তাজরীন ফ্যাশন-এর কর্মীদের সাথে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের যোগাযোগ না থাকায় ঠিক সময়ে তারা কাজ শেষ করতে পারে না। এ অবস্থায় কর্মীদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিতে প্রতিষ্ঠানটি আগ্রহী হয়।যা বিকেন্দ্রীকরণ নীতির অন্তর্গত। কর্মীরা দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা পেলে কাজে আগ্রহী হয়ে উঠবে। তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এতে যথাসময়ে কাজ সম্পাদন করে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারবে। এতে প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা বজায় থাকবে ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। তাই বলা যায়, তাজরীন ফ্যাশনের সফলতায় বিকেন্দ্রীকরণ সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক।

কর্তৃত্ব ও দায়িত্বের ভারসাম্য বিধান করতে হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।

উদ্দীপকঃ-

জনাব আরিয়ান কোম্পানির একজন ব্যবস্থাপক। তিনি যথাসময়ে অফিসে আসেন এবং যথানিয়মে কাজ সম্পাদন করে অফিস ত্যাগ করেন। তিনি নিজের কাজে খুব দক্ষ এবং প্রয়োজনে অন্যকেও বোঝাতে সক্ষম। সহকর্মীদের পরামর্শ ধৈর্য ধরে শোনেন এবং আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। তবে তাঁর অধীনস্থ কর্মীদের মধ্যে শুধু নিজ এলাকার কর্মীদের ঠিকমতো ছুটি দেন এবং অন্যদের সহজে ছুটি দিতে চান না।

ক. কেন্দ্রীয়করণ কী?

খ. কার্যবিভাজন নীতির ফলে কীভাবে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়? ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকে জনাব আরিয়ান কর্তৃক হেনরি ফেয়ল প্রদত্ত ব্যবস্তাপনার কোন নীতি উপেক্ষিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব আরিয়ানের কর্মকাণ্ড আদর্শ ব্যবস্থাপকের গুণাবলির ভিত্তিতে মূল্যায়ন করো।

 

প্রশ্নের উত্তরঃ-

ক) সিদ্ধান্ত গ্রহণের সকল ক্ষমতা উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনার হাতে রাখাকে কেন্দ্রীকরণ বলে।

 

খ) প্রতিষ্ঠানের কাজকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে প্রত্যেক কর্মীর দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব সুস্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়াকে কার্যবিভাজন বলে।এরূপ বিভাজনের ফলে প্রত্যেক বিভাগ, উপবিভাগ এবং সেই সাথে এতে নিয়োজিত জনশক্তি ও তাদের কাজকে সুনির্দিষ্ট করা সম্ভব হয়। তাছাড়া একই ধরনের কাজ করায় প্রতিটি বিভাগেই কর্মীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়। এতে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতাও বাড়ে। তাই বলা যায়, কার্যবিভাজন কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

গ) উদ্দীপকে জনাব আরিয়ান কর্তৃক হেনরি ফেয়ল প্রদত্ত ব্যবস্থাপনার সাম্যতার নীতিটি উপেক্ষিত হয়েছে।অধস্তনদের প্রতি সমান আচরণ ও যত্ন করাই হলো সাম্যতার নীতির মূল কথা। এ নীতি অনুসারে কর্মীদের যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী সমান সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। এ নীতি ন্যায়পরায়ণতার সাথে সম্পর্কিত। জনাব আরিয়ান কোম্পানির একজন ব্যবস্থাপক। তিনি নিজের কাজে খুব দক্ষ এবং নিয়মিত। তবে তার অধস্তনদের মধ্যে তিনি শুধু নিজ এলাকার কর্মীদের ঠিকমতো ছুটি দেন। বাকিদের সহজে ছুটি দিতে চান না। এক্ষেত্রে জনাব আরিয়ান সব কর্মীর প্রতি সমান আচরণ করেননি। তাই, তার এ ধরনের কাজ সাম্যতার নীতিকে লঙ্ঘন করেছে ও আদর্শ ব্যবস্থাপকের গুণাবলির ভিত্তিতে জনাব আরিয়ান একজন যোগ্য ব্যবস্থাপক।

 

ঘ) একটি প্রতিষ্ঠানের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে উক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকের দক্ষতার ওপর। একজন আদর্শ ব্যবস্থাপকর বিশেষ কিছু গুণাবলি থাকতে হয়। এর মধ্যে সাংগঠনিক জ্ঞান, পরিশ্রমী, সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা, নিয়মানুবর্তিতা, দূরদর্শিতা প্রভৃতি অন্যতম।উদ্দীপকের জনাব আরিয়ান একজন ব্যবস্থাপক। তিনি যথাসময়ে অফিসে আসেন এবং নিয়মানুযায়ী কাজ করেন। তিনি নিজের কাজে খুব দক্ষ। এছাড়াও তিনি সহকর্মীদের পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শও শোনেন এবং আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।জনাব আরিয়ান যথাসময়ে অফিসে এসে নিয়মানুবর্তিতার পরিচয় দেন। ব্যবস্থাপকীয় জ্ঞান থাকায় তিনি নিজের কাজে দক্ষ। আর সাংগঠনিক জ্ঞানের কারনে অন্যকে সাহায্য করেন এবং পরামর্শ নেন। এছাড়াও একজন আদর্শ ব্যবস্থাপকের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা গুণটিও তার রয়েছে। সর্বোপরি জনাব রায়হানের মধ্যে ব্যবস্থাপকের অন্যতম গুণসমূহ লক্ষণীয়। সুতরাং জনাব আরিয়ানকে তার গুণাবলির ভিত্তিতে একজন আদর্শ ব্যবস্থাপক বলা যায়।

উদ্দীপকঃ-

জনাব সাকিব ডুয়েল নির্মাণ কোম্পানির টঙ্গী প্রকল্পের একজন সুপারভাইজার। কাজের জন্য তাকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক জনাব চাঁদনী ও প্রকৌশলী জনাব মীমের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। একই সময়ে দুইজন বসের নিকট জাবাবদিহিতার কারণে তাঁর কাজের গতিশীলতা ব্যাহত হয়। তিনি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গোচরে আনার কথা ভাবছেন।

ক. ব্যবস্থাপনা কী?

খ. ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’- বুঝিয়ে লেখো।

গ. উদ্দীপকে জনাব সাকিব ব্যবস্থাপনার কোন স্তরের দায়িত্ব পালন করছেন? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত সাকিবের কাজে গতিশীলতা আনয়নে করণীয় সম্পর্কে তোমার অভিমত দাও।

প্রশ্নের উত্তরঃ-

ক) লক্ষ্য অর্জনের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সম্পদসমূহকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোকে ব্যবস্থাপনা বলে।

 

খ) ব্যবস্থাপনার সর্বজনীনতা বলতে সর্বত্র, সব ক্ষেত্রে, সকলের দ্বারা স্বীকৃত ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের আবশ্যকতা ও প্রয়োগ যোগ্যতাকে বোঝায়। পরিবার, রাষ্ট্র এবং ব্যবসায় সংগঠনের সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, নির্দেশনা, প্রেষণা ও নিয়ন্ত্রণ) প্রয়োগ করা হয়। স্থানীয় পরিবেশ-পরিস্থিতি, সামাজিক রীতি-নীতি ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। তবে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। তাই ব্যবস্থাপনাকে সর্বজনীন বলা হয়।

গ) উদ্দীপকের জনাব সাকিব ব্যবস্থাপনার নিম্ন স্তরের দায়িত্বপালন করছেন।ব্যবস্থাপনার যে স্তরে কর্মীদের কাজ তদারকি করা হয় তাকে নিম্ন স্তরীয় ব্যবস্থাপনা বলে। একে প্রথম সারির ব্যবস্থাপনাও বলা হয়। এ স্তরের ব্যবস্থাপকগণ মূলত মধ্যম স্তরের ব্যবস্থাপনা কর্তৃক প্রণীত কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেন। শাখা ব্যবস্থাপক, সহকারী ব্যবস্থাপক, কারখানা সুপারভাইজার, তত্ত্বাবধায়ক, ফোরম্যান, অফিস সুপার ইত্যাদি দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ স্তরে অন্তর্ভুক্ত।উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব সাকিব ডুয়েল নির্মাণ কোম্পানির টঙ্গী প্রকল্পের একজন সুপারভাইজার। কাজের জন্য তাকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও প্রকৌশলীর নিকট জবাবদিহি করতে হয়। তিনি একজন সুপারভাইজার এবং তিনি প্রকল্প ব্যবস্থাপক তথা মধ্যম স্তরীর ব্যবস্থাপকের আওতাধীন। এজন্য তাকে নিম্ন স্তরের ব্যবস্থাপক বলা যায়।

ঘ) উদ্দীপকের সাকিবের কাজে গতিশীলতা আনয়নে আদেশের ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।একজন কর্মী বা অধস্তন একজনমাত্র ঊর্ধ্বতন নির্বাহীর নিকট হতে আদেশ পাওয়াকে আদেশের ঐক্য বলে। এ নীতি অনুযায়ী দ্বৈত অধীনতা পরিহার করতে বলা হয়েছে। দ্বৈত অধীনতা বজায় থাকলে একাধিক কর্মকর্তার কাছ থেকে আদেশ আসতে থাকে ও তাদের সকলের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। এতে অধীনস্থ কর্মী কার আদেশ প্রাধান্য দেবে সে ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়। এতে তার কাজ সম্পাদনে বিঘ্ন ঘটবে।উদ্দীপকের জনাব সাকিব ডুয়েল নির্মাণ কোম্পানির টঙ্গী প্রকল্পের সুপারভাইজার। কাজের জন্য তাকে একই সাথে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও প্রকৌশলির নিকট জবাবদিহি করতে হয়। একই সময়ে দুইজন বসের নিকট জাবাবদিহির কারণে তার কাজের গতিশীলতা ব্যাহত হয়। এ থেকে বোঝা যায় তিনি দ্বৈত অধীনতার শিকার। এই দ্বৈত অধীনতা পরিহার করে আদেশের ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তার কাজে গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। এজন্য তাকে যেকোনো একজনের অধীনে কাজ করতে হবে।

 

উদ্দীপকঃ-

জনাব মালিহা তার প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হিসেবে জনাব সামিহাকে নিয়োগ দিলেন। জনাব সামিহা ভালোভাবেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন। হঠাৎ একদিন জনাব মালিহা তার নিকট আত্মীয় জনাব রিয়াজকে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন। জনাব রিয়াজ তার পরিচিত বিক্রয় ব্যবস্থাপককে এজিএম পদে পদোন্নতি দিয়ে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করলেন। এতে প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যবস্থাপকরা অসন্তুষ্ট হন। এছাড়াও জনাব রিয়াজ ব্যবস্থাপকদের নিজের মতো করে বিভিন্ন নির্দেশনা দিতেন। এতে ব্যবস্থাপকরা দোটানায় পড়ে যেতেন, কার আদেশ মান্য করবেন। বছর শেষে জনাব মালিহা দেখলেন যে, প্রতিষ্ঠানটি লোকসানের মুখে।

ক. নীতি কী?

খ. ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলার নীতিটি ব্যাখ্যা করো।

গ. জনাব রিয়াজের বিক্রয় ব্যবস্থাপকের সাথে আচরণটি হেনরি ফেয়লের কোন নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. জনাব মালিহার প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার প্রধান কারণ কোনটি? বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ-

ক) কোনো কাজ কীভাবে করা হবে তার নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন বা পথ নির্দেশিকাকে নীতি বলে।

খ) যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মীদের উপযুক্ত দায়িত্ব অর্পণ এবং সঠিক বস্তুকে সঠিক জায়গায় স্থাপনকে শৃঙ্খলার নীতি বলে।শৃঙ্খলা নীতির মাধ্যমে কর্মীর কাজের দক্ষতা বাড়ে। এতে কাজে গতি আসে। আবার সঠিক জায়গায় মেশিন, যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল রাখার কারণে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার সম্ভব হয়।

গ) উদ্দীপকের জনাব রিয়াজের বিক্রয় ব্যবস্থাপকের সাথে আচরণটি সাম্যের নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।এই নীতির মাধ্যমে সকল কর্মীর প্রতি সমান আচরণ করা হয়। কর্মীদের যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা অনুযায়ী দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব অর্পণ করা হয়। এ নীতি অনুসরণ না করলে কর্মীরা অসন্তুষ্ট হয়। কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে প্রতিষ্ঠানের কাজে বিশৃঙ্খলা হয়।উদ্দীপকে জনাব রিয়াজ তার পরিচিত বিক্রয় ব্যবস্থাপককে এজিএম পদে পদোন্নতি দেন। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও তাকে প্রদান করেন। এতে প্রতিষ্ঠানের অন্য ব্যবস্থাপকরা অসন্তুষ্ট হন। সাধারণত প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা, যোগ্যতা ও দক্ষতা বিবেচনা করে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিকেই উচ্চ পদে নিয়োগ করা হয়। কিন্তু জনাব রিয়াজ নিজের পছন্দমতো একজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। তার যোগ্যতা ও দক্ষতা বা জ্যেষ্ঠতা অন্যদের সাথে তুলনা করেননি। তিনি সকলকে সমান চোখে না দেখে একজনকে গুরুত্ব দিয়েছেন। আর এসব কাজ সাম্যের নীতির পরিপন্থী। তাই বলা যায়, জনাব রিয়াজের বিক্রয় ব্যবস্থাপকের সাথে আচরণটি সাম্যের নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ঘ) উদ্দীপকে জনাব মালিহার প্রতিষ্ঠানে আদেশের ঐক্য নীতির অনুসরণ করা না করায় প্রতিষ্ঠানটি লক্ষ্যার্জনে ব্যর্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি। এ নীতির মাধ্যমে একজন কর্মী প্রত্যক্ষভাবে শুধু একজন ঊর্ধ্বতনেরই আদেশ মেনে কাজ করে। দ্বৈত অধীনতা এখানে পরিহার করা হয়। একের অধিক নির্বাহীর অধীনে কোনো কর্মী সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে না। এতে কাজে ব্যাঘাত ঘটে ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।উদ্দীপকে জনাব মালিহা একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি জনাব সামিহাকে প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিয়োগ দেন। আর জনাব রিয়াজকে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করেন। জনাব সামিহা ভালোভাবেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। কিন্তু জনাব রিয়াজ ঊর্ধ্বতনদের নির্ধারিত নির্দেশনা না মেনে নিজের ইচ্ছামতো ব্যবস্থাপকদের কাজের নির্দেশনা দেন।এতে ব্যবস্থাপকরা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েন। ফলে প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সমস্যা হয়। কারণ, কার আদেশ পালন করতে তা ব্যবস্থাপকরা বুঝতে পারেন না। অর্থাৎ, এখানে আদেশের ঐক্য নীতি অনুসরণ করা হয়নি। সুতরাং, উত্ত প্রতিষ্ঠানে আদেশের ঐক্য নীতি না মানায় প্রতিষ্ঠান কাজে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যবস্থাপনাকে সর্বজনীন বলা হয় কেন?

উদ্দীপকঃ-

জনাব সুমন একটি বৃহৎ কোম্পানির এইচ. আর কর্মকর্তা। তার অধীনে প্রায় ১০০ জন কর্মী কাজ করে। জনাব সুমন প্রতি মাসের ৩/৪ তারিখের মধ্যে কর্মচারীদের বেতন দিয়ে থাকেন। শুধু তাই নয় জনাব সুমন প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের চেয়ে একটু বেশি আর্থিক সুবিধ্ব দিয়ে থাকেন। এতে কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠানের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে। মনোযোগ দিয়ে কাজ করে এবং কর্মচারীদের জীবনমান বৃদ্ধি পায়।

ক. হেনরি ফেয়ল কয়টি নীতি নির্দেশ করেন।

খ. ব্যবস্থাপনায় প্রশাসন মস্তিষ্কের সাথে তুলনীয় কেন?

গ. উদ্দীপকে জনাব সুমন ব্যবস্থাপনার কোন নীতি অনুসরণ করেছেন? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকের জনাব সুমনের গৃহীত নীতির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো।

প্রশ্নের উত্তরঃ-

ক) হেনরি ফেয়ল ১৪টি নাতি নির্দেশ করেন।

খ) ব্যবস্থাপনার উচ্চ স্তরের ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ হলো প্রশাসক এবং তাদের কর্ম প্রয়াসকে প্রশাসন বলে।মানুষের শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গের দিকনির্দেশনা আসে মস্তিষ্ক থেকে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের নীতি ও উদ্দেশ্য ঠিক করে প্রশাসন। এ ধরনের কাজ বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থাপনা ও সংগঠনের সহায়তা গ্রহণ করে। সে কারণেই ব্যবস্থাপনার প্রশাসনকে মস্তিষ্কের সাথে তুলনা করা হয়।

 

গ) উদ্দীপকে জনাব সুমন ব্যবস্থাপনার পারিশ্রমিক নীতি অনুসরণ করেছেন।প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের কাজের প্রকৃতি, মেধা ও যোগ্যতা বিবেচনা করে বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের নীতি হলো পারিশ্রমিক নীতি। যেকোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা তাদের মেধা, অভিজ্ঞতা ও কাজ অনুযায়ী ন্যায্য পারিশ্রমিক প্রত্যাশা করে। যোগ্য কর্মীদের ধরে রাখার জন্য এ নীতি অনুসরণ করা আবশ্যক।উদ্দীপকে জনাব সুমন একটি বৃহৎ কোম্পানির একজন এইচ, আর কর্মকর্তা। তার প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০০ জন কর্মী কাজ করে। জনাব সুমন প্রতি মাসের ৩/৪ তারিখে কর্মচারীদের বেতন দিয়ে থাকেন। অন্য প্রতিষ্ঠান থেকেও আর্থিক সুবিধা বেশি দেন। প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কাজের ধরন, অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেন। এক্ষেত্রে কর্মীদের কাজের দক্ষতাকে মূল্যায়ন করেন। এছাড়াও তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক যথাসময়ে পরিশোধ করেন। এ ধরনের কার্যসমূহ পারিশ্রমিক নীতির অন্তর্ভুক্ত। তাই বলা যায়, সুমনের প্রতিষ্ঠানটিতে পারিশ্রমিক নীতি অনুসরণ করেছেন।

 

ঘ) উদ্দীপকে জনাব সুমনের গৃহীত পারিশ্রমিক নীতিটি যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।পারিশ্রমিক নীতি অনুযায়ী কর্মীদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক দেয়া হয়। ন্যায্য পারিশ্রমিক পেলে কর্মীরা তাদের কাজের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন সহজ হয়।উদ্দীপকে জনাব সুমন তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের যথাসময়ে বেতন প্রদান করেন। তিনি প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মীদের বেশি আর্থিক সুবিধা দিয়ে থাকেন। ফলে কর্মীরা তাদের কাজে উৎসাহ পান। এছাড়া কর্মচারীরা মনোযোগ দিয়ে কাজ করে।প্রতিষ্ঠানটি তার কর্মীদের সন্তোষজনক পারিশ্রমিক প্রদান করে। ফলে কর্মীরা আগ্রহ নিয়ে কাজ করেন। তাদের কাজের প্রতি আরো মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য সহজে অর্জন হয়েছে। এছাড়া পারিশ্রমিক নীতি প্রয়োগের ফলে মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সুসম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য সহজে অর্জিত হয়। তাই, জনাব সুমনের গৃহীত পারিশ্রমিক নীতিটি যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।

উদ্দীপকঃ-

এই দেশে উন্নতমানের টাইল্স ও বেসিন তৈরির উদ্দেশ্যে জনাব আলীম একটি ফ্যাক্টরী গড়ে তোলেন। জনাব আলীমের প্রতিষ্ঠানে যেকোনো কাজ করার আগে তা নিয়ে গঠনমূলক অনেক চিন্তাভাবনা করেন এবং সংশ্লিষ্টদের কোনো দায়িত্ব দেয়ার বেলায় খেয়াল রাখেন যাতে তা পূর্বের কোনো কাজের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ না হয়। তার প্রতিষ্ঠানের উৎসাহ উদ্দীপনামুখর পরিবেশের কারণেই কর্মীরা একে তাদের নিজস্ব অঙ্গন বলেই মনে করে। এতে পণ্যের মান বজায় রেখে উৎপাদনের পরিমান যেমন দ্রুত বেড়েছে তেমনি জনাব আলীমও পরিণত হয়েছেন একজন সফল উদ্যোক্তায়।

ক. আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক কে?

খ. ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনের কার্যগত পার্থক্য কী?

গ. উদ্দীপকে জনাব আলীমের কাজে প্রধানত ব্যবস্থাপনার কোন নীতিটির প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. তুমি কি মনে করো জনাব আলীম যথার্থই একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক? যুক্তি দেখাও।

প্রশ্নের উত্তরঃ-

ক) আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হলো হেনরি ফেওল (Henri Fayol)।

খ) ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসন দুটোই উচ্চস্তরের কর্তৃপক্ষের কাজের সাথে জড়িত।ব্যবস্থাপনার কাজ মূলত পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনাদান, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণ কাজের সাথে জড়িত। অন্যদিকে প্রশাসন প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা ও স্ট্রাটেজি নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ কাজের সাথে জড়িত। ব্যবস্থাপনা প্রশাসনের চেয়ে কর্মক্ষমতার অধিকারী এবং প্রশাসন চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী।

গ) উদ্দীপকে জনাব আলীমের কাজ প্রধানত ব্যবস্থাপনার কার্যবিভাজন নীতির প্রতিফলন ঘটেছে।কার্য বিভাজন হলো কাজকে তার প্রকৃতির উপর বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত করে তা এক একজন কর্মীর ওপর অর্পন করা। এক্ষেত্রে প্রতিটি বিভাগের কর্মীদের দক্ষতা অনুযায়ী কার্য বণ্টন করা হয়। ফলে কাজের প্রতি প্রতিটি বিভাগের কর্মীর আগ্রহ বৃদ্ধি পায়।উদ্দীপকে জনাব আলীম প্রতিষ্ঠানের যে কোনো কাজ করার আগে তা নিয়ে গঠনমূলক অনেক চিন্তা ভাবনা করেন। তিনি সংশ্লিষ্টদের কোনো দায়িত্ব দেওয়ার বেলায় খেয়াল রাখেন যাতে তা পূর্বের কোনো কাজের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ না হয়। তিনি কাজকে তার প্রকৃতি অনুযায়ী পরিকল্পনা মাফিক ভাগ করার চেষ্টা করেন। আবার কর্মীদের দক্ষতার ওপর নির্ভর করে কোন কাজ কাকে প্রদান করতে হবে তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেন; যা কার্যবিভাজনে নীতির বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, জনাৰ আলীম ব্যবস্থাপনার কার্যবিভাজন নীতি অনুসরণ করেন।

ঘ) জনাব আলীম যথার্থই একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক বলে আমি মনে করি। ব্যবস্থাপনা হলো অন্যকে দিয়ে দক্ষভাবে কাজ করিয়ে নেওয়ার কৌশল। এটি প্রতিষ্ঠানের মানবীয় ও অমানবীয় সম্পদগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে লক্ষ্যপানে এগিয়ে নিয়ে যায়। যথার্থ ব্যবস্থাপক ব্যবস্থাপনা কার্য পরিচালনার জন্য ব্যবস্থাপনার নীতি বা আদর্শ মেনে চলেন।উদ্দীপকে জনাব আলীম প্রতিষ্ঠানের যেকোনো কাজের জন্য গঠনমূলক চিন্তাভাবনা করেন। তিনি দায়িত্ব অনুযায়ী কর্মীদের বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করে কাজ প্রদান করেন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ বজায় রাখেন।প্রতিষ্ঠানের সফলতা যথাযথ ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে। জনাব আলীম ব্যবস্থাপনার প্রথম কাজ পরিকল্পনা করে কার্যবিভাজন করেন। একই সাথে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্ব ও ভারসাম্য বজায় রাখেন। ফলে কর্মীরা কাজের প্রতি উৎসাহিত হয় এবং প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা তার দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে সম্ভব হয়। তাই বলা যায়, জনাব আলীম যথার্থই একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক।

আলাউদ্দীন খলজীর দাক্ষিণাত্য অভিযানের উদ্দেশ্য কী ছিল?