COS গড়ে ওঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ কী?

Table of Contents

COS গড়ে ওঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ কী?

উদ্দীপকঃ-

=> চিকিৎসকদের এক সময় পেশাগত সংগঠন ছিল না। এ কারণে তাঁরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তো। তাঁরা পেশাগত সংগঠন গড়ে তোলার জন্য তাগিদ অনুভব করেন এবং সংগঠন গড়ে তোলেন। এ সংগঠনের সদস্যপদ লাভের যোগ্যতা রয়েছে। নির্ধারিত যোগ্যতা অনুযায়ী তা ব্যাপক ভূমিকা রাখছে বলে এ পেশার কর্মীরা সামাজিকভাবে স্বীকৃত।

 

ক. COS এর পূর্ণরূপ কী?

খ. COS গড়ে ওঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ব্যাখ্যা কর।

গ. অনুচ্ছেদে বর্ণিত গড়ে তোলা সংগঠনের সাথে তোমার পঠিত কোন সংগঠনের উদ্দেশ্যগত মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. পেশার মানোন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক স্বীকৃতির দিক দিয়ে তোমার পঠিত সংগঠনটি অনুচ্ছেদে বর্ণিত সংগঠনটির মতো তুমি কি এ বক্তব্যকে স্বীকার কর? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

 

প্রশ্নের উত্তরঃ-

 

ক) COS-এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Charity Organization Society বা দান সংগঠন সমিতি।

 

খ) COS গড়ে ওঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে দারিদ্র্য দূরীকরণ বা দরিদ্রদের সেবা প্রদান করা।ষোড়শ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে দারিদ্র্যের মাত্রা এত অসহনীয় পর্যায়ে পৌছে যে, সরকার আইন করেও এ সমস্যার সমাধান করতে পারছিল না। এ প্রেক্ষিতে কতিপয় সমাজকর্মী মনে করেন সরকারি সাহায্য নয়, বরং দরিদ্রদের সক্ষম করে গড়ে তোলার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এ মনোভাব থেকে COS গড়ে তোলা হয়। এটি দরিদ্রদের আচার-আচরণ পর্যবেক্ষণ এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থা অনুসন্ধান করে দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্যোগ নেয়।

 

গ) অনুচ্ছেদে চিকিৎসকদের গড়ে তোলা সংগঠনটির সাথে NASW বা জাতীয় সমাজকর্মী সমিতির উদ্দেশ্যগত মিল রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি সমাজকর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও পেশার মান উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। উদ্দীপকে বর্ণিত চিকিৎসকদের গড়ে তোলা সংগঠনের ন্যায় জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি সমাজকর্ম পেশার মান উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। এ সমিতি সমাজকর্ম কর্মসূচি পরিচালনার জন্য প্রশাসন ব্যবস্থার উন্নয়ন, গবেষণার উন্নয়ন, ব্যবহারিক উন্নয়ন, সমাজকর্ম শিক্ষার মান উন্নয়ন প্রভৃতি উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে থাকে। এছাড়া সমাজকর্ম পেশার নিয়োগ দান, বেতন ও কর্ম পরিবেশের উন্নয়ন, সমাজকর্ম সম্পর্কে প্রচারণা, সমাজকর্মের নৈতিক মানদণ্ডের | উন্নয়ন, সমাজকর্মীদের যোগ্যতা যাচাই প্রভৃতি কাজ করে থাকে।উদ্দীপকের চিকিৎসকদের সংগঠনটিও জাতীয় সমাজকর্মী সমিতির ন্যায় পেশাগত দায়িত্ব পালন, পেশার যোগ্যতা অর্জন, পেশার মান নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন প্রভৃতি উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে গড়ে উঠেছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সংগঠনটির উদ্দেশ্যের সাথে জাতীয় সমাজকর্মী সমিতির উদ্দেশ্যগত মিল রয়েছে।

ঘ) পেশার মান উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক স্বীকৃতির দিক দিয়ে জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি (NASW) চিকিৎসকদের গড়ে তোলা সংগঠনটির মতো- কথাটি যৌক্তিক।জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি (NASW) এর নিজ নিজ পেশা সংশ্লিষ্ট কাজের সাথে জড়িত। এ সংগঠন তাদের সংশ্লিষ্ট পেশার সার্বিক মান উন্নয়নে কাজ করছে। পেশার মান উন্নয়ন, কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, সামাজিক স্বীকৃতি অর্জন প্রভৃতি উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে উভয় সংগঠন ভূমিকা রাখছে। উদ্দীপকে চিকিৎসকদের গড়ে তোলা সংগঠনটি চিকিৎসকদের পেশাগত দায়িত্ব পালন, যোগ্যতাসম্পন্ন চিকিৎসক সৃষ্টি করা, চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণা, সংখ্যালঘুদের সেবা সর্বোপরি জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সার্বিক কর্মতৎপরতা চালাচ্ছে। তেমনি আমেরিকার জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি (NASW) সমাজকর্মীদের পেশাগত শিক্ষা ও দক্ষতার মান উন্নয়ন, সাধারণ নাগরিক, সমাজকর্মের এজেন্সি পরিচালনা এবং যোগ্যতাসম্পন্ন সমাজকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি প্রভৃতি ক্ষেত্রে কার্যাবলি সম্পাদন করছে। এছাড়া বিভিন্ন স্কুল ও এজেন্সিকে শিক্ষার মান উপযোগী সাম্প্রতিক জ্ঞান ও তথ্য প্রদানের লক্ষ্যে প্রকাশনা ব্যবস্থা, উন্নয়ন গবেষণা, সংখ্যালঘুদের সেবা, ফেলোশিপ প্রদান, পরামর্শ সেবা, বার্ষিক সভা অনুষ্ঠান প্রভৃতি কার্যাবলি তত্ত্বাবধান করছে জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি।আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি চিকিৎসকদের গড়ে তোলা সংগঠনের মতোই পেশার নৈতিক মানদণ্ড সৃষ্টি, পেশাগত মান ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, সাহায্যার্থীর সাথে পেশাগত আচরণ করা, সেবাপ্রার্থীর প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা প্রভৃতি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি সঠিক ও যথার্থ।

COS গড়ে ওঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ কী?

উদ্দীপকঃ-

=> ইতিহাসবিদদের কাছে ১৭৬০ সাল থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত সময় একটি বিশেষ ঘটনার কারণে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ সময় ইউরোপ জুড়ে মানুষের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক চিন্তা জগতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।

 

ক. আরনল্ড টয়েনবি কে?

খ. শিল্পায়ন কীভাবে পারিবারিক ভাঙন ঘটায়?

গ. উদ্দীপকের ১৭৬০-১৮৫০ সালের ঘটনাটি কী? উক্ত ঘটনার বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।

ঘ. উক্ত ঘটনা কীভাবে আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক চিন্তা ধারায় আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসে তার যথার্থতা মূল্যায়ন কর।

 

 প্রশ্নের উত্তরঃ-

 

ক) আরনল্ড টয়েনবি ছিলেন একজন ব্রিটিশ ঐতিহাসিক।

 

খ) শিল্পায়নের প্রভাবে কর্মসংস্থান ও উন্নত জীবনের আকর্ষণে মানুষের ব্যাপক নগরমুখিতা পারিবারিক ভাঙন ঘটায়।শিল্পায়নের ফলে শ্রমের যে গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে তার প্রেক্ষিতে মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহর ও শিল্পাঞ্চলে গমন করে। কিন্তু বাসস্থানের স্বল্পতা, স্বল্প মজুরি এবং অপর্যাপ্ত আয় ইত্যাদি কারণে পরিবারের সব সদস্যকে নিয়ে শহরে বাস করা সম্ভব হয় না। ফলে যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবার গঠিত হচ্ছে। এভাবে শিল্পায়ন পারিবারিক ভাঙন ঘটাচ্ছে।

 

গ) উদ্দীপকে বর্ণিত ১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দের বৈপ্লবিক ঘটনাটি হলো শিল্প বিপ্লব। যার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দ হতে ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ইংল্যান্ড এবং পরে অন্যান্য দেশের উৎপাদন ব্যবস্থায় যে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসে, তাতে একটা গোটা যুগের অবস্থান হয় এবং নতুন যুগের আবির্ভাব ঘটে। ঐতিহাসিক টয়েনবি একে শিল্পবিপ্লব নামে আখ্যায়িত করেছেন। এই বিপ্লবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। শিল্পবিপ্লবের ফলে পেশি ও পশু শক্তির স্থলে যান্ত্রিক শক্তি ও প্রযুক্তির মাধ্যমে বৃহদায়তন শিল্প গড়ে তুলে উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়। নতুন নতুন ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নয়ন সাধন করে বৈচিত্র্যময় জীবনের স্বাদ গ্রহণ জনগণের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে। ব্যবসায়-বাণিজ্য ক্ষেত্রে লেনদেনের সুবিধার্থে ব্যাংক ও বিমা ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছে। ফলে ব্যবসার প্রসার ঘটেছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বিকাশ লাভ করেছে।উদ্দীপকে ১৭৬০ সাল থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত সময়কালকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলা হয়েছে। এ সময় ইউরোপের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক চিন্তায় ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। এই ঘটনাটি মূলত শিল্প বিপ্লবের প্রতিফলন। ফলে অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক প্রথা এই প্রতিষ্ঠানের সার্বিক পরিবর্তন আনে।

ঘ) উদ্দীপকের ঘটনা অর্থাৎ শিল্পবিপ্লব আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক বিপ্লবের চিন্তাধারায় আমূল পরিবর্তন সাধন করে। পাশাপাশি শিল্পবিপ্লবের সুদূরপ্রসারী ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পৃথিবীর বাহ্যিক চেহারাকে বদলে দেয়ার পাশাপাশি ভিন্নতাও এনেছে কথাটি যথার্থ। ইতিবাচক ধারার মাধ্যমে সভ্যতার চরম উৎকর্ষের পাশাপাশি শিল্প বিপ্লবের নেতিবাচক প্রভাব নানারকম অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার সৃষ্টি করেছে। শিল্পবিপ্লবের ফলে সৃষ্ট আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এর ফলে উৎপাদন ক্ষেত্রে ব্যাপক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়। বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যেও অবাধ নীতির প্রচলন ঘটে। এর ফলে উৎপাদন ব্যবস্থায় শ্রমিকের স্থানান্তর, বহুমুখী পেশা ও নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। তবে উৎপাদন মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক পেশাগত দুর্ঘটনা ও পেশাগত সংক্রামক ব্যাধির প্রাদুর্ভাবসহ নানাবিধ অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি হয়। সেই সাথে শিল্পবিপ্লব দেশীয় সংস্কৃতি ও বিশ্ব সংস্কৃতির মধ্যে সেতুবন্ধন সৃষ্টি করে। শিল্পবিপ্লব পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটায়। এর ফলে শ্রমিক শোষণের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।উদ্দীপকে দেখা যায়, ১৭৬০ সাল থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত সময়কালের ঘটনা বলতে শিল্পবিপ্লবকে নির্দেশ করা হয়েছে। এ বিপ্লব আর্থ- সামাজিক ক্ষেত্রের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন এবং রাজনীতিতে পুঁজিবাদ এবং গণতন্ত্রকে বিকশিত করেছে।উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে তাই বলা যায়, শিল্পবিপ্লবের নেতিবাচক প্রভাব থাকলেও যুগ পরিবর্তনের ধারায় এটি আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক চিন্তার ক্ষেত্রে পরিবর্তনের নিয়ামক হিসেবে ভূমিকা রাখে।

 

উদ্দীপকঃ-

=> স্কয়ার গ্রুপের একটি উৎপাদিত পণ্য রাঁধুনী গুড়া মসলা।গৃহিনীদের রান্নার কাজে নিত্য প্রয়োজনীয় এ পণ্যটি উৎপাদিত হয় কারখানায়। সম্পূর্ণ যান্ত্রিক পদ্ধতিতে এবং হাতের কোন স্পর্শ ছাড়াই এ পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। তারা হলুদ মরিচ ইত্যাদি গুড়া মসলা তৈরি করে গ্রাহকদের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে। তাদের আরো অনেক ধরণের পণ্য রয়েছে এবং এর সাথে যুক্ত হয়ে অসংখ্য মানুষ নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে।

 

ক. শিল্প বিপ্লব শব্দদ্বয়ের ইংরেজী প্রতিশব্দ কী?

খ. শিল্প বিপ্লব সংঘটিত হয় কেন?

গ. উদ্দীপকের মসলা প্রস্তুতের প্রণালীতে শিল্প বিপ্লবের সুফলকীভাবে পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা দাও?

ঘ. উদ্দীপকের প্রেক্ষাপট শিল্প বিপ্লবের ইতিবাচক প্রভাবেরই প্রতিফলন- বিশ্লেষণ করো।

 

প্রশ্নের উত্তরঃ-

ক) শিল্প বিপ্লব শব্দদ্বয়ের ইংরেজি প্রতিশব্দ- Industrial Revolution.

 

খ) উৎপাদন ব্যবস্থায় হস্ত ও কায়িকশ্রমনির্ভরতার পরিবর্তে যন্ত্রের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হয়।শিল্পবিপ্লব হলো শিল্প সংক্রান্ত বিপ্লব। ১৭৮০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে এই সুদূরপ্রসারী ও দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক বিপ্লব বিশ্বের অর্থনীতি, রাজনীতি এবং চিন্তাধারার ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন সাধন করে। পূর্বের হস্ত ও কায়িক-নির্ভরতা, কৃষি উৎপাদন ভিত্তিক ব্যবস্থা ও অর্থনীতি থেকে যন্ত্রচালিত বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থায় পরিবর্তিত হওয়ায় যোগাযোগ ‘বিজ্ঞান’ প্রযুক্তিসহ সমাজের সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হয়। ফলে শিল্প বিপ্লব সংগঠিত হয়।

 

গ) উদ্দীপকে নির্দেশিত মসলা প্রস্তুতের প্রণালীতে যান্ত্রিক পদ্ধতির ব্যবহার ব্যাপক সুফল বয়ে এনেছে যা শিল্পবিপ্লবের ফল।শিল্পবিপ্লবের প্রভাব আধুনিক সভ্যতার দ্বারা উন্মেচন করেছে। শিল্প বিপ্লবের ফলে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, উৎপাদনের নিত্যনতুন কৌশল এবং যন্ত্রের উদ্ভাবন ঘটে, যা শিল্পায়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। ফলে ব্যাপকহারে শিল্পকারখানা স্থাপিত হয়। শিল্পবিপ্লবের ফলশ্রুতিতে বিদ্যুৎ চালিত আধুনিক যন্ত্রপাতির আবিষ্কারে গৃহকেন্দ্রিক উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তে বৃহৎ আকৃতির কারখানা স্থাপিত হয়।উদ্দীপকে নির্দেশিত মসলা প্রস্তুত প্রণালীতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধন হয়েছে। বর্তমানে যান্ত্রিক পদ্ধতির ব্যবহার ও হাতের স্পর্শ ছাড়াই মসলা প্রস্তুত হচ্ছে। অথচ পূর্বে গৃহেই অবৈজ্ঞানিক ও অস্বাস্থ্যকরভাবে মসলা প্রস্তুত করা হতো। শিল্পের ব্যাপক উৎকর্ষতা লাভের পর উৎপাদিত মসলা যেমন স্বাস্থ্যকর উপায়ে প্রস্তুত হচ্ছে, তেমনি শ্রমিক খরচ ও উৎপাদন প্রক্রিয়া সহজ হয়েছে। শিল্পবিপ্লবের ফলে ব্যাপকহারে শিল্পকারখানা গড়ে উঠায়, মানুষের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এ কারণে শিল্পবিপ্লব মনুষ্য সমাজের জন্য আশীর্বাদ।

 

ঘ) উদ্দীপকে নির্দেশিত যান্ত্রিক পদ্ধতির উৎকর্ষ সাধন শিল্প বিপ্লবের ইতিবাচক পদ্ধতির প্রতিফলন।শিল্পবিপ্লব হচ্ছে কায়িক শ্রমনির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তে যন্ত্রনির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থার আবির্ভাব। শিল্প বিপ্লবের আগে উৎপাদন ক্ষেত্রে তেমন যন্ত্রপাতি ছিল না, উৎপাদনের হার ছিল কম। শিল্প বিপ্লবের ফলে কুটির শিল্পভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তে শক্তি ও প্রযুক্তিচালিত যান্ত্রিক উৎপাদন পদ্ধতি প্রবর্তিত হয়।উদ্দীপকে দেখা যায়, মসলা উৎপাদন হচ্ছে সম্পূর্ণ যান্ত্রিক পদ্ধতিতে এবং কোন রকম হাতের স্পর্শ ছাড়াই। এতে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যকর উপায়ে প্রস্তুত হচ্ছে এবং মানুষ এর সুফল ভোগ করছে, অন্যদিকে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জীবনযাত্রা এবং উৎপাদন ব্যবস্থাকে সহজ ও সাবলীল করে তুলেছে। যন্ত্র আবিষ্কারের দরুণ হস্তশিল্পনির্ভর ক্ষুদ্রায়তন উৎপাদন ও অর্থনীতি শিল্প ও যন্ত্রচালিত বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তিত হয়েছে। ফলে অর্থনেতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সকল ক্ষেত্রেই ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, যান্ত্রিক পদ্ধতির উদ্ভাবন ও প্রয়োগ শিল্প বিপ্লবের ইতিবাচক প্রভাবকে নির্দেশ করে।

 

উদ্দীপকঃ-

=> আমান পিতা-মাতার পরিত্যক্ত সন্তান। প্রথমে তাকে এবং তার মাকে তার বাবা ফেলে রেখে অন্যত্র চলে যায়। পরে তার মাও আরেক জায়গা বিয়ে করে। বর্তমানে আমান ছিন্নমূল শিশুদের সাথে সদলবলে ঘুরে বেড়ায় এবং নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।

 

ক. অক্ষম দরিদ্র কাদেরকে বলা হয়?

খ. দরিদ্রের সহায়তায় তাদের পরিদর্শকগণ কীভাবে ভূমিকা রাখতেন?

গ. আমানদের মতো শিশুদের জন্য ১৬০১ সালে দরিদ্র আইন কল্যাণকর ছিল কেন? ব্যাখ্যা দাও।

ঘ. আমানদের জন্য, উক্ত আইন কল্যাণকর হলেও ত্রুটিমুক্ত নয়- উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

প্রশ্নের উত্তরঃ-

 

ক) রুম, বৃদ্ধ, পঙ্গু, বধির, অন্ধ এবং সন্তানাদিসহ বিধবা এবং যারা কাজ করতে সক্ষম নয়, তাদেরকে অক্ষম দরিদ্র বলা হয়।

 

খ) ১৬০১ সালের দরিদ্র আইন বাস্তবায়নে পরিদর্শকগণ প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দরিদ্রদের সহায়তা করতেন।পরিদর্শকগণ ১৬০১ সালের আইনের বিধান কার্যকরীকরণ পরীক্ষা ও মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতেন। এরা সাহায্যপ্রার্থী দরিদ্রদের নিকট থেকে দরখাস্ত গ্রহণ এবং যথার্থতা যাচাই করতেন। সাহায্যপ্রার্থীদের শ্রেণিকরণ এবং সাহায্যের প্রকৃতি নির্ধারণ করে সংশোধনাগার বা দরিদ্রাগারে পাঠাতেন অথবা বহিঃ সাহায্য প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।

 

গ) ১৬০১ সালের দরিদ্র আইনে উদ্দীপকের আমানদের মতো পরিত্যক্ত শিশুদের লালন-পালনের ব্যবস্থা করা হতো বলে এ আইন এদের জন্য বেশ কল্যাণকর ছিল।১৬০১ সালের দরিদ্র আইন দরিদ্রদের দায়িত্ব গ্রহণে সরকারি দায়িত্বশীলতার প্রবর্তক। এ আইনে সাহায্য প্রার্থীদের তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। এদের মধ্যে যেসব বালক-বালিকা তাদের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল তারা নির্ভরশীল বালক-বালিকা নামে পরিচিত। পরিত্যক্ত, এতিম, অবাঞ্চিত ও পিতামাতা কর্তৃক ভরণপোষণে অক্ষমরা এই শ্রেণিভুক্ত। এদের ভরণপোষণের জন্য সরকারিভাবে দায়িত্ব গ্রহণ বা এদের লালন-পালনের জন্য ব্যবস্থা করে দেয়া হতো।উদ্দীপকের আমান পিতামাতা কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়ে বাঁচার তাগিদে ছিন্নমূল শিশুদের সাথে ঘুরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। এ রকম পরিত্যক্ত শিশুদের জন্য ১৬০১ সালের দরিদ্র আইনে ব্যবস্থা রাখা হয়। এদেরকে কোনো নাগরিকের কাছে বিনা খরচে দত্তক বা কম খরচে লালন-পালনের জন্য দেওয়া হতো। এক্ষেত্রে ছেলেদের ২৪ বছর এবং মেয়েদেরকে ২১ বছর পর্যন্ত বা বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত মনিবের বাড়িতে থাকতে হতো। যাতে নিজেদেরকে পরিচালনা করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। উদ্দীপকের আমান ও তার মতো শিশুরা এই আইনে ভরণপোষণের সুযোগ পেত। এ কারণে ১৬০১ সালের দরিদ্র আইনকে এদের জন্য কল্যাণকর বলা যায়।

 

ঘ) উদ্দীপকের আমানদের জন্য ১৬০১ সালের দরিদ্র আইন একদিকে যেমন কল্যাণকর ছিল পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যাও পরিলক্ষিত হয়।দরিদ্রদের সাহায্যদানে সর্বপ্রথম সরকারি দায়িত্বশীলতার প্রতিফলন ঘটে ১৬০১ সালের দরিদ্র আইনে। কিন্তু কিছু সীমাবদ্ধতা এ আইনকে ত্রুটিযুক্ত করেছে। এ আইনে দরিদ্রদের বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। এদের মধ্যে নির্ভরশীল বালক-বালিকা অর্থাৎ এতিম, অবাঞ্ছিত, পরিত্যক্ত শিশুদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা হলেও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য স্থায়ী পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থাই রাখা হয়নি। ফলে এ আইন দরিদ্রদেরকে স্থায়ীভাবে দরিদ্র থাকতেই সহায়তা করেছে। উদ্দীপকের আমানদের মত পরিত্যক্ত শিশুদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় সরকারি দায়িত্বে। যাতে এরা ভিক্ষাবৃত্তি বা অন্যান্য অপরাধ করতে না পারে। এদের মতো ছিন্নমূল শিশুদের সাহায্য করার জন্য আইন কার্যকর থাকলেও পরিত্যক্ত বা অবাঞ্চিত হওয়ার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান ও প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এদের জন্য পরিচালিত সাহায্য কার্যক্রমের মধ্যেও প্রকৃত সমন্বয় সাধনের অভাব পরিলক্ষিত হয়।উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, ১৬০১ সালের দরিদ্র আইনটিতে পরিত্যক্ত, অবাঞ্ছিত, এতিম শিশুদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কার্যক্রম | সম্পাদিত হলেও, কিছু ত্রুটি বিদ্যমান ছিল।

সংখ্যা পদ্ধতি ও ডিজিটাল ডিভাইস অধ্যায়ের অনুধাবন প্রশ্নোত্তর