২০২২ সালের বেস্ট ১০ টি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট

আমরা সবাই জানি কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হয়। আজকের পোষ্ট শুধু সেরা ১০ টি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট নিয়ে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস সাইটে জয়েন করার জন্য, ওই কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটে একটি একাউন্ট সাইন আপ করতে হবে। একাউন্ট approve হওয়ার পর আপনি আপনার পছন্দ মতো ক্যাটাগরি থেকে প্রোডাক্ট সিলেক্ট করে তার জন্য একটি  ইউনিক লিঙ্ক পেয়ে যাবেন। ২০২২ সালের বেস্ট ১০টি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট সম্পর্কে জেনে নিনঃ

এই লিঙ্কটি আপনার ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল বা সোশ্যাল মিডিয়া তে শেয়ার করে দিতে হবে। লিঙ্কটি আপনি সরাসরি ব্যবহার করতে পারেন, অথবা অ্যাড এর ব্যানার হিসেবে ও ব্যবহার করতে পারেন। আবার ইমেইল এর নিউজলেটার বা, ইমেইল মার্কেটিং এ ও ব্যবহার করতে পারবেন। যখনই কেউ আপনার দেয়া লিঙ্কটি তে প্রবেশ করে পন্য ক্রয় করবে, আপনি কমিশন পাবেন। প্রতিটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারের জন্য এই লিঙ্ক ভিন্ন ভিন্ন হয়। তাই, কোম্পানি গুলো সহজেই ট্র্যাক করতে পারে, কার মাধ্যমে কোন পণ্য বিক্রয় হয়েছে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর একটি ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো cookies. ব্রাউজার এ প্রবেশ করলে আমরা cookies শব্দটি দেখতে পাই। এই কুকি আসলে কি?

যখন কেউ আপনার দেয়া লিঙ্ক এ প্রবেশ করে, তা থেকে ওই ব্যক্তির ব্রাউজারে কিছু কোড জমা হয়। এই কোড গুলোই কুকি। মজার বিষয় হলো, এই cookie একটি নির্দিষ্ট দিন পর্যন্ত জমা থাকা অবস্থায়, buyer যদি ওই ওয়েবসাইট থেকে আপনার পন্য ছাড়া অন্য কোনো পন্য ও কিনে থাকেন, তা আপনার সেল হিসেবে গন্য হবে।

আসুন, এবার আপনাকে পরিচয় করিয়ে দেবো ১০ টি লিডিং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইটের সাথে।

২০২২ সালের ১০ টি সেরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট

Amazon

Amazon এর নাম শুনেনি এমন ব্যক্তি পাওয়া যাবে না। বর্তমান বিশ্বে এত দাপটের সাথে ব্যবসা করে যাওয়া এই কোম্পানির সাফল্যের পিছনে আছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর বিরাট অবদান। তাইতো Amazon affiliate marketing অত্যন্ত লাভজনক মার্কেটিং ।

Amazon affiliate marketing কে “Amazon Associates” বলা হয়। এখানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হওয়ার জন্য, সকল তথ্য দিয়ে সাইন আপ করার পর সাথে সাথেই একাউন্ট approve হয়ে যায়। এরপর,প্রোডাক্ট লিঙ্ক টি ব্যবহার করতে হবে আপনার ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে। এখানে মনে রাখতে হবে, একাউন্ট approve হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে অন্তত একটি সেল করতে না পারলে, আপনার একাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হবে। আরো একটি বিষয় হলো, Amazon প্রোডাক্ট এর ক্ষেত্রে ইমেইল মার্কেটিং করা যাবেনা।

কোন পণ্য কয়বার আপনি বিক্রয় করতে পারছেন, তার উপর ভিত্তি করে প্রতি সেল এ ১০০ ডলার এর ও বেশি আয় করা সম্ভব। অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার Amazon থেকে ২০,০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করে থাকেন। Amazon Associates এর কুকি ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত জমা থাকে। এর এর পেমেন্ট মেথড হলো ডিরেক্ট ব্যাংক ডিপোজিট।

eBay

eBay এর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট হলো “eBay Partner Network”. এই সাইট থেকে আপনি প্রতি সেল এ ৪% পর্যন্ত কমিশন পেতে পারেন। এখানে একাউন্ট ওপেন করার জন্য আপনাকে চলে যেতে হবে partnernetwork.ebay.com এ। approve হতে সময়ে লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। এরপরেই আপনি নিজের জন্য লিঙ্ক জেনারেট করে, তা সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট, ইমেইল, app এ মার্কেটিং করতে পারবেন।

eBay এর কুকি জমা থাকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত। আর পেমেন্ট নিতে পারবেন সরাসরি ব্যাংক এর মাধ্যমে।

Shopify

Entrepreneur, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, influencer, educator, সকলেই এই সাইটে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকেন। কারণ, এই সাইটে কোনো কমিশন রেন্জ নেই। আপনি যতো পারবেন, তত আয় করতে পারবেন। Shopify এ একাউন্ট approve হতে ১৫ দিন সময় লাগে। এরপর affiliate link সহ ইমেইল পাঠানো হয়। এই লিঙ্ক ব্যবহার করেই আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন।

এই সাইটে কুকি জমা থাকে ৩০ দিন পর্যন্ত। এর পেমেন্ট নেয়ার উপায় শুধুমাত্র PayPal.

Flipkart

Flipkart এ একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে প্রথমে application পাঠাতে হবে। ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে একাউন্ট approve হয়ে যাওয়ার পর ব্যানার বা লিঙ্ক দিয়ে মার্কেটিং করতে পারবেন। এখানে কুকি জমা থাকে ৩০ মিনিট। আর প্রতি সেল এ ১২% পর্যন্ত আয় করার সুযোগ রয়েছে।

CJ (Commission Junction)

CJ একটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস। প্রায় ৫০০ টি কোম্পানি CJ এর সাথে কাজ করে। এই সাইটের সুবিধা হল, আপনি এখানে ভিন্ন ভিন্ন নিশ নিয়ে কাজ করতে পারবেন। তাই খুব দ্রুত অনেক বেশি কমিশন আয় করা সম্ভব।

এই সাইটে কুকি জমা থাকে ৪৫ দিন পর্যন্ত। আর, Payment method হিসেবে payoneer ব্যবহার হওয়ায় সকলের জন্যই সুবিধা জনক হয়। তবে এক্ষেত্রে টাকা পাওয়ার জন্য একাউন্ট এ কমপক্ষে ৫০ ডলার থাকা আবশ্যক।

Hubspot

এটি একটি সফটওয়্যার প্রোভাইডার কোম্পানি। এখানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য demo video, ব্যানার ইত্যাদি উদাহরন হিসেবে দেয়া থাকে। এগুলো থেকে আইডিয়া নিয়ে আপনি সহজেই ব্যানার না অ্যাড তৈরি করে নিজের ওয়েবসাইট এ শেয়ার করতে পারবেন। Hubspot এ কুকি জমা থাকে ৯০ দিন পর্যন্ত। আর প্রতি সেল থেকে ক্ষেত্রবিশেষে ১০০% পর্যন্ত কমিশন পাওয়া সম্ভব।

Clickbank

Clickbank একটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস। এটি ডিজিটাল এবং ফিজিক্যাল দুই ধরণের পণ্য-ই বিক্রয় করে থাকে। এই সাইটে একাউন্ট ওপেন করার পর কোনও approval প্রয়োজন হয় না। প্রতি সেল এ ১৫ থেকে ৫০ ডলার পাওয়া সম্ভব। পেমেন্ট নেয়া যায় ব্যাংক চেক বা পেপাল এর মাধ্যমে। আর কুকি জমা থাকে ৩০ দিন।

Thrives Theme

Thrives Theme একটি ওয়েবসাইট বিক্রয় কোম্পানি। এই সাইটে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রতি সেল এ ৩৫% কমিশন পাওয়া যায়। এছাড়া প্রতি renewal এ আরো ২৫% কমিশন তো রয়েছেই। Thrives Theme এ বেস্ট সেলার দের private slack Channel এ invite করা হয়। এ থেকে আরো বেশি টাকা আয় করা সম্ভব হয়। এর কুকি জমা থাকে ২ বছর পর্যন্ত। payment Method হল PayPal. আর একাউন্ট approve হতে সময় লাগে কয়েক ঘণ্টা থেকে ৭ দিন পর্যন্ত।

Hostgator

Hostgator একটি ওয়েব হোস্টিং অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম। এখানে জেনারেট হওয়া লিঙ্ক দিয়ে আপনি ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া তে মার্কেটিং করতে পারবেন। একাউন্ট সাইন আপ করার জন্য Impact ( এখানে hostgator তাদের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম হোস্ট করে থাকে) এ চলে যেতে হবে। প্রাপ্ত লিঙ্ক আপনি ব্যানার, বা টেক্সট অ্যাড হিসেবে শেয়ার করতে পারবেন। Hostgator এ প্রতি সেল এ ১২৫ ডলার পর্যন্ত কমিশন করা সম্ভব।

Godaddy

এটি একটি ওয়েবসাইট এবং ডোমেইন সেলার সাইট। এই সাইটের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এদের ওয়েবসাইটে ১০০ এর ও অধিক ব্যানার এবং টেক্সট অ্যাড থাকে। আপনি শুধু ওই অ্যাড এর কোড কপি করে নিজের ওয়েবসাইট, ইমেইল এ পেস্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন। Go daddy তে প্রতি সেল এ ১০ থেকে ১৫% কমিশন পাওয়া যায়। প্রতি নতুন কাস্টমার আনার জন্য আপনি পাবেন ১০০ ডলার বোনাস। সাথে প্রতি রিনিউয়ালে পাবেন ২৫ ডলার কমিশন।

শেষ কথা

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখলে খুব দ্রুতই সাফল্য লাভ করা যায়। এর একটি হলো আপনার ওয়েবসাইটের ব্লগ। উন্নত মানের SEO Optimized ব্লগ বা কন্টেন্ট, সাইটের রিচ বাড়ায় দ্রুত। তাছাড়া review ব্লগ এবং দুই বা ততোধিক পন্যের মধ্যে তুলনা করে দেখানো হলে, সহজেই buyer কে পণ্য টি ক্রয় করতে উৎসাহী করা যায়। আশা করছি এই ব্লগ টি পড়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করার উপায় এবং ১০টি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট সম্পর্কে সামগ্রিক একটি ধারণা পেয়েছেন। আর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরুর পথে পা রাখতে পারবেন সহজেই।

আরও পড়ুনঃ কাজখুঁজি মার্কেটপ্লেস থেকে আয় করুন ঘরে বসে