নিয়ন্ত্রণকে পরবর্তী পরিকল্পনার ভিত্তি বলা হয় কেন?
উদ্দীপকঃ-
আলভা লি. একটি রপ্তানিমুখী সিরামিক কারখানা। তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা একই সময়ে ভিন্ন ভিন্ন কর্মকর্তার আদেশ পালন করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হেেচ্ছ এছাড়া উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কর্মভার বেশি হওয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ক্ষেপণ হচ্ছে।
ক. টেলি কনফারেন্স কী?
খ. নিয়ন্ত্রণকে পরবর্তী পরিকল্পনার ভিত্তি বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ভিন্ন ভিন্ন কর্মকর্তার আদেশ পালন ব্যবস্থাপনায় কোন নীতির লঙ্ঘন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উল্লেখিত পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপকদের করণীয় কী? তোমার মতামত দাও।
প্রশ্নের উত্তরঃ-
ক) কোনো সভায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ ভৌগোলিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থান করেও যে ব্যবস্থায় টেলিফোন সংযোগের মাধ্যমে সভা ও আলোচনার অংশগ্রহণ করেন তাকে টেলিকনফারেন্স বলে।
খ) নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সংশোধনী এনে নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় বলে একে পরবর্তী পরিকল্পনার ভিত্তি বলা হয়।নিয়ন্ত্রণ হলো পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ সম্পাদিত হচ্ছে কি না তা দেখা, বিচ্যুতি নির্ণয় এবং প্রয়োজনে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া। নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরিকল্পনা নেওয়া ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণ জানা যায়। এসব ত্রুটি সমাধানের উপায়ও জানা যায়। এরপর এসবের ওপর ভিত্তি করে সংশোধিত নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। এজন্য নিয়ন্ত্রণকে পরবর্তী পরিকল্পনার ভিত্তি বলা হয়।
গ) প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ভিন্ন ভিন্ন কর্মকর্তার আদেশ পালন ব্যবস্থাপনার আদেশের ঐক্য নীতির লঙ্ঘন।আদেশের ঐক্য নীতির মূলকথা হলো একজন কর্মী প্রত্যক্ষভাবে একই সময়ে শুধু একজন ঊর্ধ্বতনের কাছ থেকে আদেশ গ্রহণ করবে। অর্থাৎ কোনো কর্মী একজন মাত্র নির্বাহীর অধীনে থাকবে এবং তার আদেশ মেনে চলবে। দ্বৈত অধীনতা বা দুজন নির্বাহীর অধীনে একজন কর্মী সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে না।উদ্দীপকের আলভা লি. একটি রপ্তানিমুখী সিরামিক কারখানা। উত্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা একই সময়ে ভিন্ন ভিন্ন কর্মকর্তার আদেশ পালন করে। এতে তাদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই দেখা যায়, উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মীরা দ্বৈত অধীনতার শিকার। উক্ত প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনার আদেশের ঐক্য লঙ্ঘিত হচ্ছে।
ঘ) উদ্দীপকে বর্ণিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কর্মভার লাঘবের জন্য বিশেষজ্ঞ কর্মীকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।সরলরৈখিক নির্বাহী অধিক কর্মভারগ্রস্ত হয়ে পড়লে তাকে সহায়তার জন্য বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। এভাবে সরলরৈখিক সংগঠন সরলরৈখিক ও পদস্থ কর্মী সংগঠনে রূপ নেয়। এক্ষেত্রে সরলরৈখিক নির্বাহীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। আর তাকে সহায়তার জন্য বিশেষজ্ঞ কর্মী কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তিনি শুধু বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এতে রৈখিক নির্বাহীর কর্মভার লাঘব হয়। তার কাজ সহজ হয়। তিনি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কর্মভার অনেক বেশি। এজন্য তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। তাই তাদের কর্মভার হ্রাস ও দ্রুত সিন্ধান্ত নেওয়ার জন্য তাদের সহযোগী হিসেবে পদস্থ কর্মী নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।
উদ্দীপকঃ-
দৃশ্যকল্প১: আব্দুস সালাম একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তসমূহ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে থাকেন। তবে প্রতিষ্ঠানের কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তার নিম্নপদস্থ কর্মকর্তার মাধ্যমে গৃহীত হয়।
দৃশ্যকল্প-২: আবুল কালাম অন্য একটি বহুজাতিক কোম্পানির চেয়ারম্যান। সিদ্ধান্ত প্রণয়নের ক্ষেত্রে তিনি নিজ স্বার্থকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য সদস্যের সুবিধা- অসুবিধার বিষয় তিনি অগ্রাহ্য করেন।
ক. ব্যবস্থাপনা নীতি কী?
খ. এফ. ডব্লিউ. টেলরকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয় কেন?
গ. দৃশ্যকল্প-২-এ হেনরি ফেয়লের কোন নীতিটি অনুপস্থিত আছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হেনরি ফেয়লের কোন নীতির মিল রয়েছে? বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ-
ক) প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনার কাজ যথাযথভাবে সম্পাদনের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি অনুসরণ করাকে ব্যবস্থাপনার নীতি বলে।সহায়ক তথ্যঃ- প্রদত্ত বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার নীতি ৪টি।হেনরি ফেয়ল প্রদত্ত আধুনিক ব্যবস্থাপনার নীতি ১৪টি। আর, এফ, ডব্লিউ, টেলর।
খ) ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গতানুগতিক নিয়ম পরিহার করে বৈজ্ঞানিক নিয়মনীতির প্রয়োগকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা বলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ফ্রেডারিক উইন্সলো টেলর ব্যবস্থাপনায় গতানুগতিকতা বাদ দিয়ে বৈজ্ঞানিক নিয়ম প্রয়োগ করেন। তিনি বৈজ্ঞানিকভাবে গবেষণা করে নতুন কিছু নীতি সফলভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। ফলে ব্যবস্থাপনায় বৈজ্ঞানিক নতুন ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়। এজন্য তাকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয়।
গ) উদ্দীপকে দৃশ্যকল্প-২ এ হেনরি ফেয়লের (Henri Fayol) সাধারণ স্বার্থে নিজ স্বার্থ ত্যাগের নীতিটি অনুপস্থিত আছে।এ নীতিতে ব্যক্তিস্বার্থকে গুরুত্ব না দিয়ে সাধারণ কর্মীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এতে দলীয় চেতনা বৃদ্ধি পায়। আর নিজ স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দিলে প্রতিষ্ঠানে কাজের জটিলতা বাড়ে। প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়। এতে প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।উদ্দীপকের দৃশ্যকল্প-২ এ উল্লেখ্য, আবুল কালাম একটি বহুজাতিক কোম্পানির চেয়ারম্যান। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত প্রণয়ন কাজ করেন। এক্ষেত্রে তিনি নিজ স্বার্থকে অধিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেন। প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য সদস্যের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করেন না। এতে কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরির সম্ভাবনা বাড়ে। প্রতিষ্ঠানের কাজে তাদের আগ্রহ থাকে না। বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী স্বাধারণ স্বার্থে নিজ স্বার্থ ত্যাগের নীতি অনুসরণ না করলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। সুতরাং, দৃশ্যকল্প-২ এ উপযুক্ত নীতিটি অনুপস্থিত।
ঘ) উদ্দীপকের উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হেনরি ফেয়লের (Henri Fayol) কেন্দ্রীকরণ (Centralization) নীতির মিল আছে।এ নীতিতে প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা মূলত উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকদের হাতে থাকে। এক্ষেত্রে অধস্তনদের সিদ্ধান্তকে মূল্যায়ন করা হয় না। উচ্চস্তরের কাছে তাদের গুরুত্ব হ্রাস পায়। প্রতিষ্ঠানের নিজ স্বার্থেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা উচ্চপর্যায়ের কর্মীদের কাছে রাখা হয়।উদ্দীপকের দৃশ্যকল্প-১ এ, আব্দুস সালাম একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। অর্থাৎ তিনি একজন উচ্চস্তরের কর্মকর্তা। তিনি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তসমূহ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে থাকেন। এক্ষেত্রে তিনি নিজের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা মূলত নিজের কাছে রাখেন। বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এটি কেন্দ্রীকরণের নীতির সাথে সম্পর্কিত।দৃশ্যকল্প-২ এ, আবুল কালাম অন্য একটি বহুজাতিক কোম্পানির চেয়ারম্যান। তিনিও একজন উচ্চস্তরের কর্মকর্তা। সিদ্ধান্ত প্রণয়নের ক্ষেত্রে তিনি নিজ স্বার্থকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেন। অধস্তনদের সুযোগ-সুবিধা মূল্যায়ন করেন না। ব্যবস্থাপনার নীতি অনুযায়ী তিনি সিদ্ধান্ত নেয়ার সব ক্ষমতা নিজের কাছে কুক্ষিগত করে রাখেন; যা কেন্দ্রীকরণ নীতির সাথে সম্পর্কিত। সুতরাং, উভয় প্রতিষ্ঠানেই হেনরি ফেয়লের কেন্দ্রীকরণ নীতি মিল আছে।
উদ্দীপকঃ-
মিসেস রওশন একটি স্টিল মিলে কর্মরত আছেন। তিনি ২০১৩ সালের শুরুতে প্রতিষ্ঠানে পুঁজি সরবরাহকারী ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের একটি যৌথ সভায় অংশগ্রহণ করেন। ২০১৩ সালের জন্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লক্ষ টন নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেন। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য নতুন ৫০ জন কর্মী নিয়োগ করার জন্য তিনি কর্মী ব্যবস্থাপককে নির্দেশ দেন। উৎপাদন ও বিপণনকার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য মিসেস রওশন প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন, বিপণন, ক্রয়, অর্থ ও হিসাব বিভাগ নায়ে চারটি বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। স্ব-স্ব বিভাগের কর্মীরা ঐ বিভাগের প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ পালন করে এবং তাঁর নিকট জবাবদিহি করে। প্রতিষ্ঠানটি, ২০১৩ সালে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয়।
ক. বিকেন্দ্রীকরণ কী?
খ. ব্যবস্থাপনাকে কি পেশা বলা যায়? ব্যাখ্যা করো।
গ. মিসেস রওশন কোন স্তরের ব্যবস্থাপক? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তুমি কি মনে করো উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি কার্যবিভাজনের নীতি যথাযথভাবে অনুসরণের কারণে সফলতা পেয়েছে? যুক্তিসহ মতামত দাও।
উত্তরঃ-
ক) সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনার হাতে কেন্দ্রীভূত না রেখে বিভিন্ন স্তরের ব্যবস্থাপকের কাছে দেওয়াকে বিক্রেন্দ্রীয়করণ বলে।
খ) ব্যবস্থাপনাকে পেশা বলা হয়। কোনো ব্যক্তি যখন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ অর্জন করে সেই জ্ঞানকে কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে জীবিকা উপার্জন করেন তখন সেটিকে পেশা বলে। বর্তমানে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহ দক্ষতার সাথে পরিচালনা করার জন্য ব্যবস্থাপকের ব্যবস্থাপনার নীতি ও কৌশল সংক্রান্ত জ্ঞান থাকা একান্ত প্রয়োজন। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে তা কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করে বিপুল সংখ্যক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন। এজন্য ব্যবস্থাপনাকে পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
গ) উদ্দীপকের মিসেস রওশন উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপক।উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনা হলো প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন, ও নীতি নির্ধারণ ইত্যাদি কাজের সাথে জড়িত পক্ষ। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদ, কোম্পানি সচিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইত্যাদি এই স্তরের ব্যবস্থাপনার অন্তর্গত। উচ্চস্তরের নির্বাহী বা ব্যবস্থাপকগণ সাধারণত মানবিক ও বুদ্ধিদীপ্ত কার্যাবলি অধিকমাত্রায় সম্পাদন করে থাকেন।উদ্দীপকে মিসেস রওশন একটি স্টিল মিলে কর্মরত আছেন। তিনি পুঁজি সরবরাহকারী ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের একটি যৌথ সভায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৩ সালের জন্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লক্ষ টন নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেন। কর্মী নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন; যা ব্যবস্থাপকের কাজ। এছাড়াও তিনি প্রতিষ্ঠানের কাজের সুবিধার জন্য বিভাগ খোলেন এবং প্রতিটি বিভাগে ম্যানেজার নিয়োগ দেন, যা উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকের কাজ। তাই বলা যায়, মিসেস রওশন ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরে অবস্থান করছেন।
ঘ) উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি কার্যবিভাজনের নীতি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সফলতা অর্জন করেছে উক্তিটির সাথে আমি একমত।কার্যবিভাজন হলো কাজকে তার প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করে একেক জন বিশেষজ্ঞের ওপর একেক বিভাগের কর্তৃত্ব ও দায়িত্ব দেওয়া। এই নীতি অনুযায়ী কর্মী এবং বিভাগ তাদের নির্ধারিত কাজে বিশেষজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পায়। ফলে কার্য সম্পাদন সহজ ও দ্রুততর হয় এবং কাজে নিপুনতা আসে।উদ্দীপকে মিসেস রওশন উৎপাদন ও বিপণন কাজ সুষ্ঠুভাবে করার জন্য উৎপাদন, বিপণন, ক্রয়, অর্থ ও হিসাব বিভাগ নামে চারটি বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। নিজ নিজ বিভাগের কর্মীরা ঐ বিভাগের প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ পালন করেন এবং তাঁর কাছে জবাবদিহি করেন।এক্ষেত্রে কাজকে সঠিকভাবে প্রকৃতি অনুযায়ী মিসেস রওশনের নেতৃত্বে বিভাজন করা হয়। এতে কে, কোন কাজ কীভাবে করবে তার সুষ্ঠু সমন্বয় নিশ্চিত হয়। প্রতিনিয়ত কর্মকর্তারা একই ধরনের কাজ করায় দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পায়। প্রতিটি বিভাগের নির্বাহীদের যথাযথ তদারকিকরণের ফলে কর্মীদের কাজের প্রতি মনোবল বৃদ্ধি পায়। কর্মীরা দক্ষ ও যোগ্যতা অনুযায়ী সর্বোচ্চ মনোবল দিয়ে কাজ করে। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জিত হয়। তাই বলা যায়, প্রতিষ্ঠানের কার্যবিভাজনের নীতি যথাযথভাবে অনুসরণ করার ফলে প্রতিষ্ঠানে সফলতা অর্জিত হয়েছে।
উদ্দীপকঃ-
মুন গার্মেন্টস’ ফ্যাক্টরিতে রাফি ও নাঈম একই পদে কর্মরত দুজন কর্মী। তাদের বস রহিম। জনাব আলী হোসেন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। একদিন রাফি ও নাঈমের বিরোধ দেখা দেওয়ার নাঈমের বিরুদ্ধে রাফি জনাব আলী হোসেনের নিকট অভিযোগ করেন। তিনি রাফির ওপর চোখ রাঙিয়ে তার বস রহিমকে ডেকে তার অধস্তন কর্মীদের নিয়মকানুন শেখানোর নির্দেশ দেন।
ক. বিকেন্দ্রীকরণ কী?
খ. ব্যবস্থাপনায় নির্দেশনায় ঐক্য নীতি গুরুত্বপূর্ণ কেন?- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের ‘মুন গার্মেন্টস’ ফ্যাক্টরিতে ব্যবস্থাপনার কোন নীতিটি লঙ্ঘিত? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ভূমিকা কি সঠিক ছিল? তোমার স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ-
ক) সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনার হাতে কেন্দ্রীভূত না রেখে বিভিন্ন স্তরে ব্যবস্থাপকের কাছে প্রদান করাকে বিক্রেন্দ্রীয়করণ বলে।
খ) একই ধরনের নির্দেশনার মাধ্যমে যখন কর্মীদের কাজ করতে বলা হলে সেটিকে নির্দেশনার ঐক্য বলা হয়।সব শ্রেণি বিভাগের কর্মীদের মধ্যে একই রকম দিকনির্দেশনা দিতে হয়।প্রতিষ্ঠানে সবাই একই উদ্দেশ্যে কাজ করেন। তাই কাজের ধরন ও পদ্ধতি একই হলে ভালো হয়। নির্দেশনা সবসময় একই রকম না হলে কর্মীরা বিভ্রান্ত হয়ে যথাসময়ে মানসম্মত কাজ সম্পাদন করতে পারে না। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জন ব্যাহত হয়। তাই ব্যবস্থাপনায় নির্দেশনার ঐক্য নীতি গুরুত্বপূর্ণ।
গ) মুন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে ব্যবস্থাপনার জোড়া মই শিকলের নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে।জোড়া মই শিকল নীতি হলো প্রতিষ্ঠানের উপর থেকে নিচের স্তর পর্যন্ত সংগঠনিক নিয়মে প্রতিটি ব্যক্তি, বিভাগ ও উপবিভাগের একে অন্যের সাথে যুক্ত করা। এ নীতি অনুযায়ী প্রতিটি কর্মী বা কর্মকর্তা যেকোনো সমস্যার জন্য তার ঊর্ধ্বতনের সাথে যোগাযোগ করেন।উদ্দীপকে রাফি ও নাঈম একই পদে কর্মরত দুজন কর্মী। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে রাফি নাঈমের বিরুদ্ধে জনাব আলী হোসেনের কাছে অভিযোগ করেন। সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী রাফি ও নাঈমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হলো জনাব রহিম। আবার জনাব রহিমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হলো জনাব আলী হোসেন। জোড়া মই শিকল নীতি অনুযায়ী রাফির উচিত ছিল জনাব রহিমের কাছে অভিযোগ করা। কিন্তু, রাফি জনাব আলী হোসেনের কাছে অভিযোগ করে, যা জোড়া মই শিকল নীতির পরিপন্থী।প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা সঠিক ছিল বলে আমি মনে করি।ব্যবস্থাপনার নীতিসমূহ ব্যবস্থাপনা কার্যাবলি সম্পাদনে দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। ব্যবস্থাপনার নীতিসমূহ যথাযথভাবে মেনে চলার উপর প্রাতিষ্ঠানিক সফলতা নির্ভর করে।
ঘ) উদ্দীপকে রাফি ও নাঈম মুন গার্মেন্টসে কর্মরত দুজন কর্মী। রাফির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হলো রহিম। আর জনাব রহিমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হলো জনাব আলী হোসেন। রাফি ও নাঈমের মধ্যে দ্বন্দ দেখা দিলে রাফি আলী হোসেনের কাছে অভিযোগ করেন। আলী হোসেন রাফির ওপর চোখ রাঙিয়ে রহিমকে অধস্তন কর্মীদের নিয়মকানুন শেখানোর নির্দেশ দেন।এক্ষেত্রে রাফি কর্তৃক সরাসরি জনাব আলী হোসেনের কাছে, অভিযোগ জোড়া মই শিকল নীতি লঙ্ঘিত করে। কারণ ব্যবস্থাপনা সুনির্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করে কার্য সম্পাদন করে। এক্ষেত্রে রাফির উচিত ছিলো তার ঊর্ধ্বতন রহিমের কাছে অভিযোগ করা। কিন্তু রাফি ব্যবস্থাপনার নীতি ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করে। প্রতিষ্ঠানের সফলতা ব্যবস্থাপনার নীতি ও শৃঙ্খলা ও নিয়মকানুন বজায় রাখতে ঊর্ধ্বতনের ভূমিকাটি যৌক্তিক।
উদ্দীপকঃ-
রাইসু ফার্মা লি. একটি ছোট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির সিদ্ধান্ত গ্রহণের সব ক্ষমতা পরিচালনা পর্ষদের কাছে সংরক্ষণ করা হয়। মি. রেজা প্রতিষ্ঠানটির সহকারী বিক্রয় ব্যবস্থাপক। ছোটখাটো সিদ্ধান্ত নিতে গেলেও তাকে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকতার অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ও অধিক আনুষ্ঠানিকতার কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে এক ধরনের বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
ক. হেনরি ফেয়ল ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার কতটি কাজ নির্দিষ্ট করেন?
খ. ধারণাগত দক্ষতা বলতে কী বোঝায়?
গ. রাইসু ফার্মা লি.-এ ব্যবস্থাপনার কোন নীতিটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. কীভাবে প্রতিষ্ঠানটিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে তুমি মনে করো? যৌক্তিক মতামত দাও।
প্রশ্নের উত্তরঃ-
ক) হেনরি ফেয়ল (Henri Fayol) ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার ৫টি কাজ নির্দিষ্ট করেন।সহায়ক তথ্যঃ- হেনরি ফেয়ল প্রদত্ত ব্যবস্থাপনার কাজগুলো হলো- (১) পূর্বানুমান ও পরিকল্পনা; (২) সংগঠন; (৩) আদেশ দান; (৪) সমন্বয়; (৫) নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি।
খ) ভবিষ্যৎ অবস্থা সম্পর্কে ব্যবস্থাপকের অগ্রিম ধারণা করতে পারার সামর্থ্যকে ধারণাগত দক্ষতা বলে।একজন ব্যবস্থাপকের প্রথম কাজ পরিকল্পনা করা। এই কাজটি পূর্বানুমানের সাথে সম্পর্কিত। সঠিকভাবে পূর্বানুমান করে পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নেয়ার সামর্থ্য ব্যবস্থাপকের ধারণাগত দক্ষতার অন্তর্গত। এর মাধ্যমে ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু ও বাস্তবায়িত হয়। তাই ব্যবস্থাপকের এ ধরনের দক্ষতা থাকা আবশ্যক।
গ) উদ্দীপকে রাইসু ফার্মা লি.-এ ব্যবস্থাপনার কেন্দ্রীকরণ (Centralization) নীতিটি প্রতিফলিত হয়েছে।এ নীতিতে প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সব ক্ষমতা মূলত উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকদের হাতে থাকে। এক্ষেত্রে অধস্তনদের সিদ্ধান্তকে মূল্যায়ন করা হয় না। তাদের মতামতও নেয়া হয় না। সাধারণত প্রতিষ্ঠানের নিজ স্বার্থেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা উচ্চস্তরের কর্মীদের কাছে রাখা হয়।উদ্দীপকের রাইসু ফার্মা লি. একটি ছোট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির সিদ্ধান্ত গ্রহণের সব ক্ষমতা পরিচালনা পর্ষদের কাছে সংরক্ষণ করা হয়। মি. রেজা প্রতিষ্ঠানটির সহকারী বিক্রয় ব্যবস্থাপক। ছোটখাটো সিদ্ধান্ত নিতে গেলেও তাকে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কারণ, প্রতিষ্ঠানটিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নিম্ন স্তরের কর্মীদের কাছে দেয়া হয়নি। সব ক্ষমতাই উচ্চস্তরের কর্মকর্তাদের কাছে আছে। এসব বৈশিষ্ট্য কেন্দ্রীকরণ নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটিতে এ নীতিই অনুসরণ করা হয়েছে।
ঘ) উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটিতে বিকেন্দ্রীকরণ (Decentralization) নীতির মাধ্যমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে আমি মনে করি। এ নীতিতে প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর্যাপ্ত ক্ষমতা নিম্নস্তরের কর্মীদের দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সব ক্ষমতাই নিজের কাছে রাখেন না। কর্মীদের যোগ্যতা অনুযায়ী এ ক্ষমতা তিনি অধস্তনদের মধ্যে বণ্টন করেন। এতে নিম্নস্তরের কর্মীরা সন্তুষ্ট থাকে।উদ্দীপকের রাইসু ফার্মা লি.-এর সিদ্ধান্ত নেওয়ার সব ক্ষমতাই পরিচালনা পর্ষদের। মি. রেজা প্রতিষ্ঠানটির সহকারী বিক্রয় ব্যবস্থাপক। ছোট খাটো সিদ্ধান্ত নিতেও উচ্চস্তরের কর্মকর্তাদের অনুমোদনের জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয়। এতে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়। কাজের শৃঙ্খলাও নষ্ট হয়।এই অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটিতে বিকেন্দ্রীকরণ নীতি অনুসরণ করা যেতে পারে। এতে সহকারী ব্যবস্থাপক নিজেই কাজের ছোটখাটো সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারবেন। ফলে বারবার মালিক পক্ষের কাছে সমস্যা সমাধানের জন্য যেতে হবে না। এতে দ্রুত সব কাজ সম্পন্ন হবে। কাজেও শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। সুতরাং, বিকেন্দ্রীকরণ নীতির মাধ্যমেও প্রতিষ্ঠানটিতে কাজের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
উদ্দীপকঃ-
মি. রবিন একটি কোম্পানির জনসংযোগ কর্মকর্তা। কোম্পানি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ভিতরে ও বাইরের বিভিন্ন পক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা ও প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে ভালো ইমেজ সৃষ্টিতে তিনি কাজ করেন। তার এম.ডি জনাব উদ্দীন ব্যস্ত মানুষ। প্রতিষ্ঠান সামনে কোন দিকে কীভাবে এগুবে তা তাকে ভাবতে হয়। তিনি তার অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে ভবিষ্যৎকে যেন অনুমান করতে পারেন। পরিচালক পর্যদ তার এরূপ দক্ষতা কে সমীহ করে।
ক. ব্যবস্থাপনা কী?
খ. ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলানীতি বলতে কী বোঝায়?
গ. মি. রবিনের কাজে তার কোন ধরনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. জনাব উদ্দীন যে ধরনের দক্ষতার অধিকারী তা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ- উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন করো।
প্রশ্নের উত্তরঃ-
ক) লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সম্পদসমূহ যথাযথভাবে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াকে ব্যবস্থাপনা বলে।
খ) ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা নীতির মূল বিষয় হলো যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য স্থানে এবং উপযুক্ত বস্তুটি সঠিক স্থানে স্থাপন করা।শৃঙ্খলার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের মানবীয় ও অমানবীয় (যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, অর্থ) উপাদানসমূহের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা সম্ভব হয়। এছাড়াও এতে অপচয় রোধ করা যায়, কাজ করতে সময় কম লাগে। এভাবে শৃঙ্খলা নীতিটির যথাযথ বাস্তবায়নের দ্বারা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়।
গ) উদ্দীপকের মিঃ রবিনের কাজে তার আন্তঃব্যক্তিক ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যের সাথে আলাপ-আলোচনা, কথা বলা ও যোগাযোগ রক্ষার কাজকে একজন ব্যবস্থাপকের আন্তঃব্যক্তিক ভূমিকা বলে। প্রাতিষ্ঠানিক বিষয় নিয়ে একজন ব্যবস্থাপককে ঊর্ধ্বতন ও অধস্তনদের সাথে পরামর্শ করতে হয়। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের বাইরের বিভিন্ন পক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখতে হয়।উদ্দীপকের মি. রবিন একটি কোম্পানির জনসংযোগ কর্মকর্তা। তিনি প্রতিষ্ঠানের ভিতরে ও বাইরের বিভিন্ন পক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। এছাড়াও তিনি প্রতিষ্ঠানের ভালো ইমেজ তৈরিতে কাজ করেন। এরূপ যোগাযোগ ভিত্তিক কাজগুলোতে তার আন্তঃব্যক্তিক ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ঘ) উদ্দীপকের জনাব উদ্দীনের ধারণাগত দক্ষতা প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।ভবিষ্যত অবস্থা ও পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক অনুমান করতে পারার ক্ষমতাকে ধারণাগত দক্ষতা বলে। একজন ব্যবস্থাপককে অনিশ্চয়তা আর ঝুঁকির মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এক্ষেত্রে অনিশ্চিত ভবিষ্যত সম্পর্কে সঠিক অনুমান তার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।উদ্দীপকের জনাব উদ্দীন একটি প্রতিষ্ঠানের এম.ডি। তাকে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে হয়। তিনি তার অর্ন্তদৃষ্টি দিয়ে ভবিষ্যৎকে অনুমান করতে পারেন। পরিচালক পর্যদ তার এরূপ অর্ন্তদৃষ্টির ক্ষমতাকে সমীহ করে। একজন ব্যবস্থাপকের প্রথম কাজ হলো পরিকল্পনা করা। আর এই পরিকল্পনার ক্ষেত্রেই ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনুমান সবচেয়ে জরুরি। এছাড়াও ভবিষ্যতের সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারলে তা সহজেই প্রতিষ্ঠানের কাজে লাগানো যায়।
উদ্দীপকের জনাব উদ্দীন তার ধারণাগত দক্ষতা দিয়ে ভবিষ্যৎ অনুমান করেন। ফলে তিনি সহজেই প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেন। তাই তার এই দক্ষতাকে পরিচালক পর্ষদ গুরুত্বের সাথে দেখেন। সুতরাং, প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জনে জনাব উদ্দীনের ধারণাগত দক্ষতা অপরিহার্য।
উদ্দীপকঃ-
রেখানা বেগম একটি গার্মেন্টস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি এমনভাবে সংগঠন কাঠামো তৈরি করেছেন যেন কোনো কর্মীকেই একাধিক ঊর্ধ্বতনের সরাসরি অধীনে কাজ করতে না হয়। এতে কর্মীরা স্বাচ্ছন্দে কাজ করে এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানের নীতি নির্ধারণে তাকে যেমন কাজ করতে হয়; তেমনি কর্মীদের সুযোগ- সুবিধার কথাও তাকে ভাবতে হয়।
ক. আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয় কাকে?
খ. কেন্দ্রীয়করণ ও বিকেন্দ্রীয়করণ বলতে কী বোঝায়?
গ. রেহানা বেগম ব্যবস্থাপনার কোন স্তরে কর্মরত আছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সংগঠন কাঠামো প্রণয়নে উদ্দীপকের রেহানা বেগম হেনরি ফেয়লের যে নীতি অনুসরণ করেছেন তার যথার্থতা মূল্যায়ন করো।
প্রশ্নের উত্তরঃ-
ক) হেনরি ফেয়লকে (Henri Fayol) আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয়।
খ) শুধু উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখাকে কেন্দ্রীকরণ বলে। অন্যদিকে, ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়াকে বলা হয় বিকেন্দ্রীকরণ। কেন্দ্রীকরণে অধস্তন কর্মীদের কম গুরুত্ব দেওয়া হয়। উচ্চস্তর থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে অধস্তনদের দিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হয়। অপরদিকে, বিকেন্দ্রীকরণের ফলে অধস্তন কর্মীদের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। এতে তারা উৎসাহিত হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রতি সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে কাজ করে।
গ) উদ্দীপকের রেহানা বেগম ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরে কর্মরত আছেন। উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকগণ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতিনির্ধারণী কাজ করেন। তারা লক্ষ্য, কৌশল, পরিকল্পনা তৈরিতে জড়িত থাকেন। এ পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণ সরাসরি মানসিক শ্রম দিয়ে থাকেন।উদ্দীপকের রেহানা বেগম একটি গার্মেন্টস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি প্রতিষ্ঠানের সংগঠন কাঠামো তৈরি করেছেন। এছাড়াও তাকে প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারণী কাজ করতে হয়। তার এরূপ মানসিক শ্রম ও নীতি নির্ধারনী কাজ উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকের কাজের সাথে সম্পূর্ণ মিলে যায়। সুতরাং, রেহানা বেগমকে একজন উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপক বলা যায়।
ঘ) সংগঠন কাঠামো প্রণয়নে উদ্দীপকের রেহানা বেগম হেনরি ফেয়লের আদেশের ঐক্য নীতিটি অনুসরণ করেছে, যা যথার্থ।একজন কর্মী প্রত্যক্ষভাবে একই সময়ে শুধু একজন ঊর্ধ্বতনের আদেশ গ্রহণ করার নীতিকে আদেশের ঐক্য নীতি বলে। অর্থাৎ, কোনো কর্মী একজন মাত্র নির্বাহীর অধীনে থাকবে। এতে কর্মীরা দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে।উদ্দীপকের রেহানা বেগম তার প্রতিষ্ঠানের জন্য সংগঠন কাঠামো তৈরি করেছেন। সেক্ষেত্রে কোনো কর্মীকেই যেন একাধিক ঊর্ধ্বতনের সরাসরি অধীনে কাজ করতে না হয়, এই বিষয়টি বিবেচনা করেছেন। এতে কর্মীরা স্বাচ্ছন্দে ও শৃঙ্খলার সাথে কাজ করতে পারে। কর্মীদের এরূপ সুবিধার কথা ভেবেই তিনি সংগঠন কাঠামোটি তৈরি করেছেন। একজন নির্বাহীর অধীনে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। একই সাথে দুইজন নির্বাহীর আদেশ মানতে হলে কর্মীর দক্ষতা ও কাজের গতি কমে যায়। ফলে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতাও কমে যাবে। এছাড়াও একই কর্মীকে দুইজন নির্বাহীর অধীনে কাজ করতে হলে প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। ফলে প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হওয়ার সাথে সাথে কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। উল্লিখিত বিষয়গুলো থেকে বোঝা যায়, সংগঠন কাঠামো তৈরিতে আদেশের ঐক্য নীতি অনুসরণ করা অপরিহার্য।
উদ্দীপকঃ-
রতন জুট মিলস লি.-এ মি. আশিক যন্ত্র প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন। এ বিষয়ে তার বিদেশি ডিগ্রি রয়েছে। তাই কর্তৃপক্ষ তার অধীনে মিলের সকল ম্যাকানিক ও যন্ত্রপাতির দায়িত্ব ন্যস্ত করে। অন্যদিকে মি. নাফিস প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পরিচালক পর্ষদের সভায় যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও নীতি-কৌশল নির্ধারিত হয় তা তিনি সাধারণ ব্যবস্থাপকের মাধ্যমে বিভাগীয় ব্যবস্থাপকদের অবগত করেন, যা বাস্তবায়নের সকল পর্যায়ের ব্যবস্থাপকের কাজ করে।
ক. প্রশাসন কী?
খ. জোড়া মই শিকল নীতি বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে মি. আশিক কোন ধরনের ব্যবস্থাপকীয় দক্ষতার অধিকারী? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মি. নাফিসের কাজ একটি দেহের মস্তিষ্কের সাথে তুলনীয় উদ্দীপকের আলোকে বক্তব্যের যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ-
ক) প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ স্তর, যেখানে উদ্দেশ্য, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, কৌশল ও নীতি নির্ধারণ কাজ করা হয় তাকে প্রশাসন বলে।
খ) যে নীতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ব্যক্তি, বিভাগ ও উপবিভাগ কর্তৃত্বের শিকলে একটি অপরটির সাথে যুক্ত থাকে তাকে জোড়া মই শিকল (Scalar chain) বলে।প্রতিষ্ঠানে কর্তৃত্ব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার থেকে ধাপে ধাপে অধস্তনের কাছে নেমে আসে। ফলে প্রতিটি বিভাগ ও ব্যক্তি কর্তৃত্বের শিকলে কারও না কারও সাথে যুক্ত থাকে। এ শিকল কর্মীদের কর্তৃত্বের প্রবাহ ও যোগাযোগের পথ নির্দেশ করে।
গ) উদ্দীপকে মি. আশিক ব্যবস্থাপকীয় কারিগরি দক্ষতার অধিকারী। প্রতিটি কাজ সম্পাদনে যে বিশেষ পদ্ধতি বা কৌশল ব্যবহৃত হয় এ দক্ষতা ব্যবস্থাপকের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ব্যবস্থাপক কর্মীদের দিয়ে দ্রুত কাজ করাতে পারেন। কারিগরি জ্ঞান নিম্নস্তরের ‘কর্মীদের জন্যও প্রয়োজন। কারণ, তাদের মাধ্যমে কাজ করানো হয়। কোনো যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জ্ঞান, হিসাব সংরক্ষণ, হিসাব নিরীক্ষা প্রভৃতি কাজ এ দক্ষতার মাধ্যমে করা হয়।উদ্দীপকে রতন জুট মিলস লি.-এ আশিক যন্ত্র প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন। এ বিষয়ে তার বিশেষ জ্ঞান আছে। তিনি দক্ষতার সাথে যন্ত্রপাতি পরিচালনা করতে পারেন। ফলে অধস্তনদের মাধ্যমে দক্ষভাবে এসব কাজ আদায় করার বিশেষ ক্ষমতা তার মধ্যে বিদ্যমান। তাই কর্তৃপক্ষ তার অধীনে মিলের সকল মেকানিক ও যন্ত্রপাতির দায়িত্ব ন্যস্ত করে। এসব বৈশিষ্ট্য ব্যবস্থাপকের কারিগরি দক্ষতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, মি. আশিক কারিগরি দক্ষতার অধিকারী।
ঘ) উদ্দীপকের মি. নাফিস একজন প্রশাসক। তাই তার কাজ একটি দেহের মস্তিষ্কের সাথে তুলনীয় বলে আমি মনে করি। একজন প্রশাসক প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য, নীতিমালা, পরিকল্পনা প্রণয়ন কাজের সাথে জড়িত থাকেন। এরা প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করেন। ব্যবস্থাপকদেরকে প্রশাসকগণ তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। এরা অধিক মাত্রায় চিন্তনীয় কাজের সাথে জড়িত থাকেন। উদ্দীপকে মি. নাফিস প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পর্ষদের সভায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও নীতি কৌশল নির্ধারিত হয়। তিনি তা সাধারণ ব্যবস্থাপকদের মাধ্যমে বিভাগীয় ব্যবস্থাপকদের অবগত করেন। তিনি যে কাজগুলো করছেন তা বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী প্রশাসনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।মানুষ কোনো কাজ করার আগে চিন্তা করে। কাজটি কীভাবে করতে হবে তা মস্তিষ্কের মাধ্যমে চিন্তা করা হয়। তারপর শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হয়। তেমনি প্রশাসন প্রতিষ্ঠানের চিন্তনীয় কাজ (পরিকল্পনা, নীতিমালা প্রণয়ন) ঠিক করেন। এরপর তা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থাপনা কার্যাবলির (সংগঠন, কর্মীসংস্থান, প্রেষণা, নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি) সহায়তা নেন। মি. নাফিসও প্রশাসক হিসেবে এ কাজগুলোই করেন। তাই, তার কাজও একটি দেহের মস্তিষ্কের সাথে তুলনীয়।