দরিদ্র আইন কমিশন কি?

উদ্দীপকঃ-

=> রাসেল অনার্স পড়াকালীন সময়ে খারাপ সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডসহ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তার বাবা একজন সমাজকর্মীর শরণাপন্ন হন। সমাজকর্মী রাসেলের চিকিৎসক, বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সদস্যগণ বন্ধুবান্ধবের সাথে যোগাযোগ করে সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।

 প্রশ্ন-

ক. ইংল্যান্ডে প্রথম দরিদ্র আইন কে প্রণয়ন করেন?

খ. দরিদ্র আইন কমিশন বলতে কী বুঝ?

গ. উদ্দীপকটির গৃহীত পদক্ষেপের ক্ষেত্রে সমাজকর্মের কোন সংগঠনের সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ইংল্যান্ডের সমাজকর্ম বিকাশের প্রেক্ষিতে উত্ত সংগঠনটির পটভূমি বিশ্লেষণ কর।

 প্রশ্নের উত্তরঃ-

ক) ইংল্যান্ডের প্রথম দরিদ্র আইন প্রণয়ন করেন রাজা তৃতীয় এডওয়ার্ড।

খ) ইংল্যান্ডে প্রচলিত দরিদ্র আইন সংস্কার ও বেকার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ১৯০৫ সালে লর্ড জর্জ হ্যামিল্টনকে সভাপতি করে ১৮. সদস্য বিশিষ্ট যে কমিশন গঠিত হয় তাকেই দরিদ্র আইন কমিশন বলা হয়। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশের উন্নত প্রযুক্তি, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ইংল্যান্ডের অনেক কয়লাখনি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক বেকারত্বের শিকার হয়ে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানায়। এ অবস্থায় শ্রমাগার ও বেসরকারি দান সংগঠনগুলোও সাহায্য দানে অপরাগ হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে দরিদ্র আইনগুলোর সংস্কার ও বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য ১৯০৫ সালে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিশন গঠিত হয় যা দরিদ্র আইন কমিশন গঠিত হয়।

 

গ) উদ্দীপকের গৃহীত পদক্ষেপের ক্ষেত্রে সমাজকর্মের CSWE সংগঠনের সাদৃশ্য রয়েছে।

CSWE সংগঠনটি সমাজকর্মীদের পেশাগত শিক্ষা ও দক্ষতার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে। পেশাগত যোগ্যতাসম্পন্ন সমাজকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধিও এর অন্যতম লক্ষ্য। এ সংগঠনটি সমাজকর্ম শিক্ষাকে বৈজ্ঞানিক, সময় উপযোগী ও তত্ত্ব নির্ভর করে। এছাড়া সমাজকর্ম অনুশীলনের পন্থা সম্পর্কেও নির্দেশনা প্রদান করে।উদ্দীপকে বর্ণিত রাসেল অনার্স পড়াকালীন সময় খারাপ সঙ্গের কারণে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে এবং মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এ অবস্থা উত্তরণে তার বাবা একজন সমাজকর্মীর শরণাপন্ন হন। সমাজকর্মী রাসেলের চিকিৎসক, বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সমাজকর্মীর এসব পদক্ষেপ ও প্রক্রিয়া গ্রহণের ক্ষেত্রে CSWE সংগঠনের ভূমিকা রয়েছে। কারণ সংগঠনটি সমাজকর্মীর পেশাগত শিক্ষা ও দক্ষতার মান উন্নয়নে। কাজ করে। এছাড়াও সংগঠনটি সমাজকর্ম অনুশীলনের পন্থাও নির্দেশ করে দেয়। তাই বলা যায়, সমাজকর্মী CSWE সংগঠনের ভিত্তিতেই রাসেলের সুস্থতার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

পঞ্চদৈত্য ও সামাজিক নীতি কী?

ঘ) ইংল্যান্ডের সমাজকর্ম বিকশিত হলে বিশ্বব্যাপী সমাজকর্ম পেশার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় সমাজকর্ম শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে CSWE সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

সমাজকর্ম শিক্ষার বিকাশ ও প্রসার এবং যোগ্যতাসম্পন্ন দক্ষ সমাজকর্মী তৈরির লক্ষ্যে ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠিত হয় CSWE। এটি আমেরিকার একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যা সমাজকর্ম পেশাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। আমেরিকায় ১৯২৭ সালে AASSW এবং ১৯৪২ সালে NASSA নামক দুটি সংগঠন গড়ে ওঠে। এই দুটি সংগঠনের মধ্যে কিছুটা মতভেদ ছিল। এ মতভেদ দূর করার লক্ষ্যে ১৯৫১ সালে এ দুটি সংগঠন একত্রিত হয়ে CSWE নামধারণ করে। উদ্দীপকে উল্লিখিত সমাজকর্মী রাসেলের সমস্যা সমাধানে CSWE সংগঠনের নির্দেশিত পন্থা অনুসরণ করে। সংগঠনটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিশেষ সহায়তা প্রদান করে। এ সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য সমাজকর্ম শিক্ষার সামগ্রিক মানোন্নয়ন এবং দক্ষ ও যোগ্য সমাজকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজকর্ম শিক্ষার মান উন্নয়ন। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি, সমাজকর্ম স্কুল সংগঠনের পাঠ্যসূচির মান আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে। সমাজকর্ম শিক্ষা কারিকুলামে যে বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে তা নির্ধারণে নেতৃত্ব প্রদানকারী ফোরাম হিসেবে এ কাউন্সিল কাজ করছে।

সার্বিক আলোচনার শেষে বলা যায়, ইংল্যান্ডে সমাজকর্ম পেশার বিকাশই CSWE সংগঠনটি গড়ে ওঠার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

দান সংগঠন সমিতি কেন গঠিত হয়?