|

ট্রানজিস্টর কীভাবে অ্যামপ্লিফায়ার হিসেবে কাজ করে?

Table of Contents

উদ্দীপকঃ-

টেলিফোন আধুনিক সভ্যতার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল ১৮৭৫ সালে টেলিফোন আবিষ্কার করেন। গ্রাহাম বেলের আবিষ্কৃত টেলিফোন বহু বিবর্তনের মধ্য দিয়ে আজকের আধুনিক টেলিফোনে এসে পৌছেছে। টেলিফোনের প্রেরক যন্ত্রের মাইক্রোফোনে কথা বললে গ্রাহক যন্ত্রের স্পীকারে সে কথা শোনা যায়। টেলিফোন হলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত এক জটিল যোগাযোগ মাধ্যম।

ক . p- টাইপ অর্ধপরিবাহীর একটি উদাহরণ লিখ।

খ. এডিসন ক্রিয়া কী?

গ. উদ্দীপকের যন্ত্রটির প্রেরক যন্ত্রের মাইক্রোফোনে কথা বললে তা কীভাবে গ্রাহক যন্ত্রের স্পীকারে শোনা যায়? আলোচনা কর।

ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর।

 

প্রশ্নের উত্তরঃ-

ক) সিলিকনের সাথে বোরন যোগ করে তৈরি অর্ধপরিবাহী হলো p- টাইপ অর্ধপরিবাহীর একটি উদাহরণ।

 

খ) বিজ্ঞানী এডিসন ১৮৮৩ সালে যখন তড়িৎ বাতি নিয়ে কাজ করছিলেন তখন একটি জিনিস তাকে খুব বিব্রত করছিল। তার বাতির কার্বন ফিলামেন্টের ধনাত্মক প্রান্ত বারবার পুড়ে যাচ্ছিল। এ অসুবিধা দূর করার জন্য তিনি ফিলামেন্টের সাথে একটি প্লেট সিল করে ঢুকিয়ে দেন। পরে তিনি দেখতে পান যে ফিলামেন্ট সাপেক্ষে প্লেটকে যখন ধনাত্মক বিভব দেওয়া হচ্ছে তখন ভ্যাকুয়াম টিউবের মধ্য দিয়ে একটি তড়িৎপ্রবাহ চলে। কিন্তু প্লেটকে ঋণাত্মক বিভব দিলে তড়িৎপ্রবাহ চলে না। এডিসন বিষয়টির ব্যাখ্যা এভাবে দেন যে, যেহেতু উত্তপ্ত ফিলামেন্ট থেকে নিঃসৃত আধান ধনাত্মক প্লেটের দিকে যায় তাই এ আধান ঋণাত্মক। প্লেট ঋণাত্মক হলে ঐ নিঃসৃত আধানকে বিকর্ষণ করে ফলে বর্তনীতে কোনো তড়িৎ প্রবাহ থাকে না। এটাই এডিসন ক্রিয়া নামে পরিচিত।

 

গ) টেলিফোনের প্রেরক যন্ত্রের মাইক্রোফোনে কথা বললে তা যেভাবে গ্রাহক যন্ত্রের স্পীকার শোনা যায় তা নিম্নরূপ: আমরা যখন কথা বলি মাউথপিসের মাইক্রোফোনটি কন্ঠস্বরের শব্দ তরঙ্গকে তড়িৎ সংকেতে রূপান্তরিত করে। এ সংকেত টেলিফোনের তার দিয়ে অপর টেলিফোনের ইয়ারপিসে যায়। ইয়ারপিসের স্পীকার তড়িৎ সংকেতকে শব্দে রূপান্তরিত করে, ফলে গ্রাহক বা শ্রোতা শব্দ শুনতে পান এবং কথার জবাব দেন। এ জবাব শ্রোতার টেলিফোন সেটের মাউথপিসের মাইক্রোফোনের সাহায্যে তড়িৎ সংকেতে পরিণত হয়ে প্রেরকের টেলিফোনে ফিরে আসে এবং প্রেরকের ইয়ারপিসের স্পীকারে শব্দে পরিণত হয়, প্রেরক গ্রাহকের কথা শুনতে পায়।

 

ঘ) টেলিফোন যোগাযোগের ক্ষেত্রে এত বেশি উন্নতি সাধিত হয়েছে যে বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয় এসে গেছে। বহু বিবর্তনের মধ্য দিয়ে গ্রাহাম বেলের আবিষ্কৃত টেলিফোন আজকের আধুনিক টেলিফোনে এসে পৌঁছেছে। আজকাল তৈরি হয়েছে কর্ডলেস, সেলুলার মোবাইল ইত্যাদি নামের টেলিফোন। অনেক সুবিধার জন্য এখন কর্ডলেস টেলিফোনের ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে। এ ব্যবস্থায় তারের সংযোগ ছাড়াই মূল টেলিফোন সেট থেকে দূরে বসে অনায়াসে টেলিফোন করা যায়। টেলিফোনের তারে তড়িৎ সংকেত এত দ্রুত সঞ্চালিত হয় যে, এতে কোনো বিলম্ব ঘটে না। প্রতিটি টেলিফোন সেট এর আঞ্চলিক প্রধান অফিসের সাথে তারের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে। আঞ্চলিক প্রধান অফিসের মাধ্যমে অন্য টেলিফোনের সাথে যোগাযোগ ঘটানো হয়।তাই উপরোক্ত আলোচনা হতে উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি অর্থাৎ ‘টেলিফোন হলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত এক জটিল যোগাযোগ মাধ্যম’ উক্তিটির যৌক্তিকতা সার্থক।

 

উদ্দীপকঃ-

নীরব একটি প্রাইভেট কোম্পানীর মালিক। সে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগের জন্য ফ্যাক্স ব্যবহার করত। কিন্তু সে বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজগুলো করে থাকে।

ক. ডিজিটাল সংকেত কাকে বলে?

খ. ট্রানজিস্টর কীভাবে অ্যামপ্লিফায়ার হিসেবে কাজ করে?

গ. রাকিবের পূর্বে ব্যবহৃত যন্ত্রটির ক্রিয়াকৌশল প্রবাহ চিত্রের মাধ্যমে ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের দুটি যোগাযোগ মাধ্যমের কোনটি ব্যবহার করা সুবিধাজনক বলে তুমি মনে কর। যুক্তিসহ ব্যাখ্যা কর।

 

প্রশ্নের উত্তরঃ-

ক) যে যোগাযোগ সংকেত শুধু কিছু নির্দিষ্ট মান গ্রহণ করতে পারে তাকে ডিজিটাল সংকেত বলে।

 

ট্রানজিস্টর কীভাবে অ্যামপ্লিফায়ার হিসেবে কাজ করে?

খ) অ্যামপ্লিফায়ার অন্তর্গামীতে প্রদত্ত সংকেতকে বহির্গামীতে বিবর্ধিত রে। ইলেকট্রনিক অ্যামপ্লিফায়ার ক্ষুদ্র অন্তর্গামী সংকেতকে বৃহৎ হির্গামী সংকেতে পরিণত করে। ট্রানজিস্টর অ্যামপ্লিফায়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কারণ তড়িৎ প্রবাহের পরিবর্তন বৃদ্ধি করতে বা বিবর্ধিত করতে ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হয়। অন্তর্গামী হতে পারে তড়িৎ প্রবাহ বা ভোল্টেজ। ট্রানজিস্টর পীঠ প্রবাহের সামান্য পরিবর্তন সংগ্রাহক প্রবাহের বিরাট পরিবর্তন ঘটায়। ট্রানজিস্টর পীঠ প্রবাহকে ৫০ থেকে ১০০ গুণ বাড়িয়ে দিয়ে সংগ্রাহক প্রবাহ হিসেবে প্রদান করতে পারে। তাই বিভিন্ন ইকেট্রনিক বর্তনীতে ট্রানজিস্টরকে অ্যামপ্লিফায়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

 

গ) রাকিবের পূর্বে ব্যবহৃত যন্ত্রটি হলো ফ্যাক্স। ফ্যাক্স হলো এমন একটি ইলেকট্রনিক ব্যবস্থা যার মাধ্যমে যে কোন তথ্য, ছবি, চিত্র, ১ ডায়াগ্রাম বা লেখা হুবহু কপি করে প্রেরণ করা যায়। আধুনিক ফ্যাক্স মেশিন হলো একটি অতি উন্নত প্রযুক্তির তড়িৎ আলোকীয় মেশিন। এখানে ইলেকট্রনিক উপায়ে মূল ডকুমেন্টকে স্ক্যানিং করা হয়। এরপর স্ক্যানকৃত সংকেতকে বাইনারী সংকেতে রূপান্তর করা হয়। এই সংকেত স্ট্যান্ডার্ড মোডেম কৌশল ব্যবহার করে টেলিফোনের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়। গ্রাহক ফ্যাক্স মেশিন প্রেরিত ইলেকট্রনিক সংকেত গ্রহণ করে মোডেমের সাহায্যে ডিমডুলেট করে মূল ডকুমেন্টে পরিণত করে। একটি প্রিন্টার এই মূল ডকুমেন্টকে হুবহু ছেপে বের করে। ফ্যাক্স মেশিনের •ক্রিয়াকৌশলের প্রবাহ চিত্র নিম্নরূপ:

ট্রানজিস্টর কীভাবে অ্যামপ্লিফায়ার হিসেবে কাজ করে?

 

ঘ) উদ্দীপকে উল্লেখিত যোগাযোগ মাধ্যমদুটি হলো ফ্যাক্স ও ইন্টারনেট। ফ্যাক্স মেশিন ইলেক্ট্রনিক উপায়ে স্ক্যানকৃত সংকেতকে বাইনারী সংকেতে রূপান্তর করে স্ট্যান্ডার্ড মোডেম কৌশল ব্যবহার করে টেলিফোনের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয় যা গ্রাহক ফ্যাক্স মেশিন কর্তৃক মোডেমের সাহায্যে ডিমডুলেটেড হয়ে মূল ডকুমেন্টে পরিণত হয়। অন্যদিকে ইন্টারনেট কম্পিউটার হতে প্রাপ্ত বাইনারী সিগন্যালকে | টেলিফোন কল এবং ইন্টারনেট লাইন সংযোগের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন প্রান্তের কম্পিউটারে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পৌঁছে দিতে পারে। গ্রাহক কম্পিউটার প্রাপ্ত বাইনারী সিগন্যালকে মেসেজ সিগন্যালে রূপান্তর করে। এই দুই মাধ্যমের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক। নিচে যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করা হলোঃ-

i. ফ্যাক্স যোগাযোগের জন্য প্রচুর কাগজের দরকার হয় যা ইন্টারনেট ব্যবস্থায় দরকার হয় না। প্রেরক ও গ্রাহক উভয়েই পেপার জ্যামিং এর স্বীকার হতে পারে এই ব্যবস্থায়।

ii. ফ্যাক্স এর গতি সীমিত অন্যদিকে ইন্টারনেটের গতি ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুসারে অনেক বেশি হতে পারে। ফলে খুবই জরুরী বার্তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্রুত পাঠানো যেতে পারে।

iii. LAN, MAN, WAN এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবস্থায় টপ সিক্রেট বার্তাগুলো বা অফিসিয়াল মেসেজসমূহ কোন ছোট বা বড় কমিউনিটির মধ্যে খুব দ্রুত নিরাপত্তার সাথে আদান প্রদান করা যেতে পারে।

iv. ইন্টারনেট ব্যবস্থায় খুব ভারী বা সফিস্টিকেটেড বার্তা খুব সহজে পাঠানো যায় যা ফ্যাক্সে সম্ভব না।

V. এছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটি গ্রুপের সদস্যরা একই সময়ে নিজেদের মধ্যে টেক্সট, অডিও বা ভিডিও মেসেজ শেয়ার করতে পারে। এমনকি গ্রুপ ভিডিও কলিং এর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনাও করতে পারে। যা ফ্যাক্স এ সম্ভব নয়।

 

উদ্দীপকঃ-

রাহেলা বেগমের স্বামী চাকরির সুবাদে কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়া গেছেন। তাই সম্প্রতি রাহেলা বেগম তার স্বামীর সাথে যোগাযোগের জন্য বাসায় ইন্টারনেট সংযোগ নিয়েছেন। তিনি তার স্বামীর সাথে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ই-মেইলে বিভিন্ন তথ্যের আদান- প্রদান করেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে রাহেলা বেগম বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারেন।

ক. রঙিন টেলিভিশনের পর্দা কয় রকম ফসফর দানা দ্বারা গঠিত?

খ. কম্পিউটার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয় কেন?

গ. ইন্টারনেটের মাধ্যমে রাহেলা বেগম কোন কোন ধরনের কাজ করতে পারেন- ব্যাখ্যা কর।

ঘ. মাধ্যমটি ব্যবহার করে রাহেলা বেগম কীভাবে তার স্বামীর কাছে ই-মেইল পাঠাতে পারেন- ব্লকচিত্রের সাহায্যে আলোচনা কর

 

 প্রশ্নের উত্তরঃ-

ক) তিন রকম।

খ) কম্পিউটার অবিশ্বাস্য দ্রুত কাজ করতে পারে, সেকেন্ডে হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ গাণিতিক হিসাব করতে পারে। তাই কম্পিউটারের কাজ করার দ্রুততা, তথ্য জমা করে রাখার ক্ষমতা, সঙ্গতিপূর্ণতা, নির্ভুলতা, ক্লান্তিহীনতা ও স্বয়ংক্রিয়তার জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয়।

 

গ) আমরা জানি, ইন্টারনেট অনেকগুলো নেটওয়ার্কের সমষ্টি এবং সকলে মিলে একটি একক নেটওয়ার্কের মতো কাজ করে। তাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে রাহেলা বেগম ওয়েব সাইট ব্রাউজিং করতে পারেন, ই-মেইল পাঠাতে এবং গ্রহণ করতে পারেন ও ভিডিও কনফারেনসিং করতে পারেন, আড্ডা দিতে পারেন এবং গল্প গুজব করতে পারেন, ট্রেন, বাস বা প্লেনের টিকিট বুকিং দিতে পারেন এবং ইলেকট্রনিক কমার্স বা ব্যবসা-বাণিজ্য, ই-ব্যাংকিং ও শপিং করতে পারেন। ইলেকট্রনিকভাবে যে কোনো ফাইল, ডকুমেন্ট ইত্যাদি পাঠাতে ও গ্রহণ করতে পারেন। এছাড়া যে কোনো সময় অনলাইন লাইব্রেরির হাজার-হাজার লক্ষ লক্ষ বই, জানাল, ম্যাগাজিন ইত্যাদির সন্ধান পেতে পারেন এবং প্রয়োজনে পাঠ করতে পারেন অথবা ‘ডাউনলোড’ করে ছেপে বের করে নিতে পারেন।

 

ঘ) আমরা জানি, ইন্টারনেট হচ্ছে অনেকগুলো নেটওয়ার্কের সমষ্টি এবং সকলে মিলে একটি একক নেটওয়ার্কের মতো কাজ করে। এ – নেটওয়ার্ক প্রেরক ও গ্রাহকের মধ্যে যে কোনো তথ্য বা উপাত্ত আদান প্রদানে সক্ষম।উদ্দীপক অনুযায়ী, ইন্টারনেটের মাধ্যমে রাহেলা বেগম তার স্বামীর কাছে ই-মেইল পাঠানোর ক্ষেত্রে রাহেলা বেগম প্রেরক এবং তার স্বামী গ্রাহক। তাই এক্ষেত্রে, রাহেলা বেগম তার ই-মেইল এড্রেস দিয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগের সাহায্যে তার অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী স্বামীর ই- মেইল এড্রেসে ই-মেইল পাঠাবেন। তখন রাহেলা বেগমের স্বামী তার কম্পিউটারের ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ই-মেইলটি পেয়ে যাবেন। রাহেলা বেগম তার স্বামীর কাছে ই-মেইল যেভাবে পাঠাবেন তা ব্লকচিত্রের মাধ্যমে নিম্নে দেয়া হলোঃ- (ছক) রাহেলা বেগমের কম্পিউটার = টেলিফোন = ইন্টারনেট সংযোগ – টেলিফোন, রাহেলা বেগমের স্বামীর কম্পিউটার। লাইন সংযোগ থাকবে।

সংখ্যা পদ্ধতি ও ডিজিটাল ডিভাইস অধ্যায়ের অনুধাবন প্রশ্নোত্তর