এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি দূর করার উপায় জানুন

হঠাৎ করে গরুর মাংস খেলে শরীরের হাত, পায়ে লাল দাগ কিংবা চুলকাতে আরম্ভ করে।এটাকে এলার্জি জনিত সমস্যা হিসেবে ধরা হয়।পরিপূর্ণভাবে এলার্জি থেকে আপনারা কখনোও মুক্ত নাও থাকতে পারেন।ছোটদের বা বাচ্চাদের এই সমস্যা বেশি লক্ষণীয়।এছাড়া বাল্যকালে আপনার এলার্জি না থাকলেও একটা বয়সে গিয়ে চুলকানির মতো রোগ থেকে এটি হতে পারে।এক্ষেত্রে রোগটি নিয়ন্ত্রণে কিভাবে রাখতে পারেন, সেই নিয়ে আলোচনা করবো।চলুন নিচে জেনে নেই কি কি থাকবে আর্টিকেলেঃ

এলার্জি দূর করার উপায় কি?

এলার্জির সবচেয়ে ভালো ঔষধের নাম কি?

এই রোগটি হতে পারে এমন জাতীয় খাবার কি কি?

এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জির কারণ কি?

দেহকে নানা রকম রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে যা জীবাণু হতে রক্ষা করে।কিন্তু অনেক সময় মানুষের দেহে কিছু উপাদান গেলে, এই ব্যবস্থা এলার্জির মতো প্রতিক্রিয়া দেখায়।এমন প্রতিক্রিয়ার মধ্যে আছে, চুলকানো শুরু হওয়া কিংবা ত্বকে লালচে দাগ হওয়া।যে সকল প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম উপাদান দেহের স্পর্শে এলার্জির লক্ষণ হতে পারেঃ

হাঁস, গরু, পুঁইশাক ইত্যাদি এলার্জিযুক্ত খাদ্য খেলে।নাক, মুখ দিয়ে ভিতরে ধুলাবালি ঢুকে গেলে হাচিকাশি শুরু হতে পারে।অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা গরমে ঘাম জমে জ্বর থেকেও এলার্জি হয়।বিষণ্নতা ও মানসিক চাপ, ডিপ্রেশনের মতো রোগ থেকে এর উৎপত্তি ঘটতে পারে।নাক দিয়ে ফুলের পরাগ রেণু প্রবেশ করলে বা কিছু কিছু ঔষধের কারণে এই রোগ দেহে আগমন করতে পারে।

কি কি লক্ষণ দেখা যাবে এলার্জি হলে?

আমাদের শরীর কিছুসংখ্যক এলার্জিক জিনিসের স্পর্শ পেলেই দ্রুত সময়ে তার প্রতিক্রিয়া শুরু করে দেয়।এর লক্ষণগুলো দেখা দিতে আরম্ভ হবেঃ ত্বকে চাকা চাকা হওয়া, ফুলে যাবে বা চামড়ায় ফোস্কার মতো হতে পারে।এছাড়াও শরীরে রেশ, চুলকাতে থাকবে।চোখ লাল হয়ে ফুলে উঠা বা চুলকানি কিংবা পানি ঝরতে থাকবে।হাঁচি, কাশি, গলা ও নাকে চুলকানো হতে পারে।মুখ, চোখ, জিহ্বাসহ ঠোঁট ফুলে যেতে পারে।

এলার্জি হয় এমন খাবারসমূহঃ

যেসমস্ত খাদ্য পেটে প্রবেশ করলে এলার্জি হতে পারবে সেগুলো হচ্ছেঃ শাক ও সবজির মধ্যে বেগুন, পুঁইশাক, বাদাম, চিংড়ি ও ইলিশ মাছ, হাঁস ও গরুর মাংসে।আবার বাচ্চাদের গরুর দুধ ও ডিমেও থাকতে পারে।সেটা প্রতিক্রিয়ার পরেই সঠিকভাবে বুঝা যাবে।তবে একেকজনের উপরোক্ত একেক উপাদান থেকে এলার্জি হবে।কেউ চিংড়ি খেলে রোগের লক্ষণ দেখা যাবে।আবার কারোর এই চর্ম রোগটি আছে, কিন্তু চিংড়িতে লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে।তাই কার কি খাবারে এলার্জি সেটা নির্ণয় করতে পারলে, অনেকাংশেই রোগের নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।একটা কথা বলে রাখা ভালো এটা কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়।তবে কারো ক্ষেত্রে বংশগত রোগ থাকতে পারে।

এর চিকিৎসা কি?

আমাদের প্রত্যহ জীবন ও খাবারে একটু পরিবর্তন ঘটালে এই রোগ অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে।এজন্য মানতে হবে নিয়মঃ আপনার শ্বাসনালির কোনো রোগ থাকলে বা হাঁপানি হলে স্থানীয় ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিন।এই জাতীয় খাবার হতে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন সব সময়।শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম, নিয়মিত কিছুটা শারীরিক পরিশ্রম করে মানসিক চাপ থেকে নিজের মনকে বিশ্রাম দিন।অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় যেকোনো একটি ওষুধ রোগীদের এর চিকিৎসায় লেখা হয়।তবে এই জাতীয় ট্যাবলেট অথবা সিরাপ খেলে মাথা ঝিম ঝিম করা বা ভালো ঘুম হতে পারে।তাই তো ডাক্তাররা রাতে ঘুমানোর আগে এগুলো সেবন করতে বলেন।আপনি আগাম বার্তা হিসেবেও অ্যান্টিহিস্টামিন ঔষধ খেতে পারেন পার্শ্বক্রিয়া ছাড়া।অনেক দিন নাক বন্ধ থাকলে চিকিৎসকের লেখে দেওয়া স্প্রে কিংবা ড্রপ দিতে পারেন।তবে সাতদিন এর বেশে সেগুলো ব্যবহার থেকে বিরত থাকেন।আবার কিছু মলম অথবা ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ত্বকে ব্যবহৃত করা পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা।

এলার্জি কিভাবে প্রতিরোধ করবেনঃ

যেসকল জিনিস বা উপাদান থেকে এই চর্মরোগের সৃষ্টি তা এড়িয়ে চলাই এর থেকে মুক্তির প্রধান উপায়।এছাড়া রোগটিকে প্রতিরোধ করতে নিম্নের নিয়মকানুন মানতে পারেনঃ পশুপাখি যেগুলো গৃহে পালন করতে চান, তাদের বাসস্থান নিজ আঙিনা হতে একটু দূরে তৈরি করেন।আর গৃহপালিত গরুছাগলকে পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখুন।চাইলে নিজের খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে পারেন।কাঁথা, কম্বল, বিছানার চাদর বা বালিশ সপ্তাহে একবার হলেও রোধে শুকান ও মাসে কয়েকবার ধুয়ে শুকাতে দিন।ধুলামুক্ত, পরিচ্ছন্ন জায়গায় সময় কাটান।এছাড়া যেকোনে ধুলাযুক্ত, ঘর, বাড়ি পরিচ্ছন্ন করার সময় কিংবা অপরিষ্কার স্থানে মাস্ক পড়েন।আর যেগুলো ভেজানো যাবে, তা পানিতে ভেজা কাপড় দ্বারা মুছতে পারেন।ডাস্ট মাইট নামক পোকা থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করুন।এরা এতোই ছোট যে মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখতে হয়।মানুষের চামড়া থেকে খোসা মরা কোষ খাবার হিসেবে এরা গ্রহণ করে।বাড়ি ঘর শুষ্ক রাখতে পারেন, যাতে মোল্ড অথবা ছত্রাক বাসা বাধতে না পারে।ঘরের ভিতরে জানালা দিয়ে ভালো বাতাস প্রবাহ ঘটে এমন ব্যবস্থা রাখবেন।আর ঘরে দড়ি লাগিয়ে ভেজা কাপড় শুকাতে দিবেন না।চাইলে বারান্দায় শুকানো যাবে।পোশাক হিসেবে ঢিলেঢালা ব্যবহার করুন।অতিরিক্ত টাইট ফিট কাপড় পড়বেন না।আপনার অতিরিক্ত ঠান্ডা হতে কাশি বা হাঁচি থাকলে পুকুরে নেমে গোসল বা বৃস্টিতে ভিজবেন না।অসহনীয়তা অথবা সেন্সিটিভিটিকে এর প্রাথমিক সমস্যা মনে করা হয়।

মাঙ্কি পক্স কি? মাঙ্কি পক্সের লক্ষণ সমূহ জেনে নিন

এলার্জি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার সমাপ্তি এখানেই ঘটালাম।আগামীতে নতুন একটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হবো।