স্মার্টফোন হ্যাং এবং স্লো হলে সমাধানের ১০ টি উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

বর্তমান যুগে মোবাইল নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য। অধিকাংশ মানুষ এখন মোবাইল ফোন কেনার আগে তার প্রয়োজন অনুযায়ী সে ভালো মানের স্মার্ট ফোন কিনে নেয়। সেই ফোন গুলো বেশ কিছু দিন ভালো চললেও পরে সেগুলো ধীরে ধীরে স্লো হ্য় এবং হ্যাং হয়। যা অত্যধিক বিরক্তির সৃষ্টি করে। আজকাল স্মার্টফোন নিয়ে আমরা যে সাধারণ সমস্যার সম্মুখীন হই তা হ্যাঙ্গিং ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোনের দীর্ঘায়িত ব্যবহারের পর অনেক সময় ফোন হ্যাং করতে শুরু করে। স্মার্টফোন হ্যাং এবং স্লো হলে সমাধানের ১০ টি উপায় এবং স্মার্ট ফোন কেন হ্যাং হয় তা জেনে নিন। স্মার্টফোন হ্যাং এবং স্লো হলে সমাধানের ১০ টি উপায় জেনে নিনঃ

যখনই মোবাইল ফোন স্লো হয়ে যায় বা হ্যাং হয়ে যায়, তখনই কিন্তু আমরা এর সঠিক কারণ খুঁজে বের করতে পারি না।  এ সমস্যার বেশ কিছু কারণ আছে। আজকের আর্টিকেলে আমি মোবাইলের হ্যাং এবং স্লো সমস্যা এড়ানোর প্রধান ১০ টি কারণ এবং টিপস উপস্থাপন করব।

র‌্যাম

বেশিরভাগ স্মার্টফোনই হ্যাং হয়, যদি র‌্যামে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকে তবে হ্যাং হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কাজেই ভারী অ্যাপস ডাউনলোড বা ইনস্টলের আগে আপনার ফোনের র‌্যাম চেক করে নিবেন। যদি আপনার ফোনের র‌্যাম পারফরম্যান্স খারাপ হয় তাহলে সমস্ত ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করার চেষ্টা করুন। তারপর দেখুন আগের তুলনায় বেশি অ্যাক্টিভ হয় কিনা।

টাস্ক ম্যানেজার

ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস গুলো বন্ধ করে রাখতে হবে। এর জন্য আপনি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে টাস্ক ম্যানেজার ব্যবহার করতে পারনে। উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা প্লে স্টোর থেকে টাস্ক ম্যানেজার অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারেন।

লাইভ ওয়ালপেপার

লাইভ ওয়ালপেপার বা অ্যানিমেটেড ওয়ালপেপার কার না ভালো লাগে। এটি খুবই আকর্ষণীয়। আপনার ফোনে কখনো অ্যানিমেটেড বা লাইভ ওয়ালপেপার রাখবেন না, কারণ এগুলো মোবাইল ফোনকে যথেষ্ট স্লো করে। এটি সরাসরি র‌্যামের কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। সব সময় নরমাল বা স্থির কোন ওয়ালপেপার দিয়ে আপনার ডিভাইস ডিসপ্লে রাখার চেষ্টা করুন।

ফোন মেমরী

ফোন মেমরীর অত্যধিক ব্যবহার ফোন হ্যাং হওয়ার আর একটি প্রধান কারণ। আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে হ্যাং সমস্যা সমাধানের জন্য ফোন মেমরীর সমস্ত মিউজিক, ভিডিও বা অন্যান্য তথ্য এসডি কার্ড বা মেমোরী কার্ডে সরিয়ে রাখতে পারেন। কারণ ফোন মেমরী ফাঁকা না থাকলে ফোন হ্যাং বা স্লো হয়।

মাল্টিটাস্কিং

ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় একাধিক ট্যাব চালাবেন না বা একাধিক কাজ করবেন না। কারণ এটি প্রসেসরকে ধীর করে দেয় এবং প্রচুর র‌্যাম খরচ করে। একসাথে কখনোই বেশি টাস্ক ওপেন করবেন না। যেমন আপনি ভিডিও দেখতেছেন এই অবস্থায় সেটিকে এক্সিট না করে অন্য অ্যাপ ওপেন করলেন।

এন্টি ভাইরাস

ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস প্রতিরোধকরার জন্য আপনার মোবাইলে নির্ভরযোগ্য অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করুন। অনলাইনে বিভিন্ন প্রকার ফ্রি এবং পেইড অ্যান্টিভাইরাস পাওয়া যায়। ফ্রি চালানোর জন্য আপনি এভিজি অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করতে পারেন। অ্যান্টিভাইরাস ছাড়া স্মার্ট ফোন চালানো বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস আপনার স্মার্টফোনে প্রবেশ করলে সেটি আপনার ফোনকে স্লো করে দিতে পারে।

ক্যাশ

সাধারণত, আমরা যে অ্যাপগুলি প্রতিদিন ব্যবহার করি তা ক্যাশ তৈরি করে যার ফলে ফোন  হ্যাং হয়। নিয়মিত ফোনের ক্যাশগুলো ক্লিয়ার করা উচিত। কারণ যখনই আপনি আপনার ফোনে ওয়েবসাইট ব্রাউজ করেন তখন এটি আপনার ক্যাশে বিট ডেটা সঞ্চয় করে। উক্ত ক্যাশ ক্লিয়ার করলে আপনার মোবাইলের গতি অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে।

সফটওয়্যার আপডেট

একটি স্লো অ্যান্ড্রয়েড ফোনের গতি বাড়ানোর জন্য একটি সিস্টেম আপডেটের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি, যদিও পুরোনো ফোনগুলিতে সাম্প্রতিক সফটওয়্যারটি সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে। তাছাড়া যদি আপনি প্রায়ই হ্যাং সমস্যার সম্মুখীন হন, তাহলে এটি ফোনের সফটওয়্যার বাগের সমস্যা হতে পারে। এই সফটওয়্যার বাগ এড়ানোর জন্য ফোনের ফার্মওয়্যার সফটওয়্যার আপডেট করার প্রয়োজন।

অবাঞ্ছিত ডেটা মুছে দিন

অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে/সরিয়ে যতটা সম্ভব ফোন মেমরী এবং এক্সটার্নাল মেমরী ফ্রি রাখুন। এতে করে আপনার ফোন অনেক ফাস্ট কাজ করবে। যদি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ধীর গতিতে চলতে থাকে, তাহলে আপনার ফোনের ক্যাশে সংরক্ষিত অতিরিক্ত ডেটা সাফ করে এবং অব্যবহৃত কোনো অ্যাপ মুছে দিয়ে সমস্যাটি দ্রুত সমাধান করা যেতে পারে। এছাড়া একসাথে একাধিক অ্যাপ চালানো এড়িয়ে চলুন। কারণ এতে করে প্রসেসর স্লো কাজ করে। আপনি যদি লো-এন্ড স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তাহলে একই সময়ে একাধিক অ্যাপ না চালানোই ভালো। মনে করুন আপনি কোন একটা অ্যাপ ইনস্টল করেছেন অনেক দিন আগে কিন্তু সেটি আর এখন ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়েনা। আপনি সেই অ্যাপটি আনইনস্টল করে ফোন ফ্রি রাখতে পারেন। এভাবে অব্যবহৃত অ্যাপ এবং ফাইল মুছে দিলেও মোবাইলের গতি বৃদ্ধি পায়।

ফ্যাক্টরি ডেটা রিসেট

ফ্যাক্টরি রিসেট আপনার ফোনকে তার ডিফল্ট ফ্যাক্টরি সেটিংসে ফিরিয়ে দেবে। যদি আপনি উপরোক্ত সমস্ত চেষ্টা করার পরও আপনার ফোন এখনও ধীরগতির বা হ্যাং করে তাহলে বিকল্প হিসেব ফ্যাক্টরি ডেটা রিসেট করে দেখতে পারেন। এর জন্য প্রথমে আপনার ফোনের ব্যাক-আপ নিবেন। কারণ ফ্যাক্টরী ডেটা রিসেট করলে আপনার ফোনের সমস্ত তথ্য চলে যাবে। ব্যাকআপ নেয়ার পর ফোনের সেটিংস-এ গিয়ে রিসেট ক্লিক করুন। এই প্রক্রিয়া শেষ হলে আপনার ফোন নতুন অবস্থায় যেরকম ছিল ঠিক সেই রকম হবে।

উপরোক্ত সমস্ত পদ্ধতি অবলম্বন করেও যদি আপনার ফোন দ্রুত কাজ না করে বা হ্যাং হয় তবে কোন টেকনিশিয়ানকে দেখাতে পারেন। আপনাকে সর্বোচ্চ ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। এই লেখাটি পড়ে যদি আপনার বিন্দুমাত্র উপকার হয় তবে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

আরও পড়ুনঃ প্রিপেইড মিটারের প্রয়োজনীয় কোড।