তারুণ্য ধরে রাখার কৌশল জেনে নিন

তারুণ্য ধরে রাখার কৌশল যদি আপনি জানেন তাহলে জীবনকে অনেক সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারবেন। বুড়িয়ে যাওয়া বা অল্প বয়সে তারুণ্য হারানো এখন খুব পরিচিত একটা সমস্যা। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া ১২টি গুরুত্বপূর্ণ খাবার খেয়েই কিন্তু তারুণ্য ধরে রাখা যায় এবং বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করা যায়। আজকের আর্টিকেলে এই বিষয়টি নিয়ে লেখা হয়েছে। অনুগ্রহ করে কিছুটা সময় নিয়ে মনোযোগ সহকারে পুরো লেখা পড়ুন।

তারুণ্য ধরে রাখার সহজ কৌশল কি?

সবাই চায় চিরকাল তারুণ্য ধরে রাখতে। এক আমেরিকান পরিসংখ্যান বলছে- আমেরিকায় বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ সংক্রান্ত গবেষণায় বিনিয়োগের মাত্রা ছাড়িয়েছে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ থেকেই প্রমাণ হয়ে যায় যে, বুড়ো হতে চায় না এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। কারণ এ পৃথিবীতে কোন মানুষই বুড়ো হতে চায়না।

আপনিও যদি  তাদেরই একজন হয়ে থাকেন তাহলে জেনে নিন এমন কিছু খাবার সম্পর্কে, যেগুলো খাওয়া শুরু করলে ত্বকের বয়স তো কমবেই, সেই সঙ্গে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করবে যে তার প্রভাবে শরীরেরও বয়স কমবে চোখে পড়ার মতো।

কি ধরণের খাবার খেতে হয়?

আসলে বেশ কিছু খাবারে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যেমন ধরুন নিউট্রিয়েন্ট এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা বয়স তো কমায়ই সেই সঙ্গে শরীরকেও চাঙ্গা রাখে। শুধু তাই নয়, একাধিক মারণ রোগকে ধারে কাছে ঘেঁষতে দেয় না। ফলে  আয়ু বাড়তে সময় লাগেনা। আসুন জেনে নেওয়া যাক কী কী খাবারের মধ্যে শরীরের বয়স কমানোর ক্ষমতা রয়েছে।

দই খানঃ-

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন দই খাওয়া শুরু করলে দেহের ভেতরে প্রোটিনের ঘাটতি দূর হয়, সেই সঙ্গে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে রিবোফ্লাবিন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি১২ এর মাত্রা। ফলে শরীরের বয়স কমে চোখে পড়ার মতোে। এতে বেশ কিছু রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।

আরও পড়ুনঃ ব্রেস্ট ক্যান্সার কি এবং কেন হয়?

অলিভ অয়েল:-

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ, এই তেল ক্যান্সার প্রতিরোধের পাশাপাশি বয়স-সম্পর্কিত বিভিন্ন জটিলতা কমাতে দুর্দান্ত।

জাম:-

এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা বয়স বাড়ার গতিকে আটকায়। শুধু তাই নয়, ক্র্যানবেরি, স্ট্রবেরি এবং অবশ্যই ব্ল্যাকবেরি শরীরের সার্বিক গঠনের উন্নতি ঘটাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই প্রতিদিন যদি এই ফলটা খাওয়া যায়, তাহলে শরীরের ভাঙন রোধ হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর এবং ত্বকের সৌন্দর্য় বাড়তে শুরু করে।

বাদাম খানঃ-

শরীরকে ভালো রাখতে উপকারী ফ্যাটেরও প্রয়োজন পড়ে। তাই প্রতিদিন বাদাম খান মুঠো ভরে। এতে উপকারী ফ্যাটের পাশাপাশি রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে দারুন কাজে আসে।

 নিয়মিতই সবুজ শাকসবজিও ফলমূল খাবেন-

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কোপরা পাতা এবং পালং শাকে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট নামক এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যা কোষের ক্ষয় রোধ এবং ত্বক ও শরীরে বয়স ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

শস্যদানা খাওয়াঃ-

ঝাড়াই করা শস্য দানার পরিবর্তে যদি হোল গ্রেন খাওয়া যায়, তাহলে বয়স বাড়ার হার অনেকটাই হ্রাস পায়। শুধু তাই নয়, এই ধরনের খাবার বয়সজনিত নানা রোগ হওয়ার আশঙ্কাও কমায়। বিশেষত হার্টের রোগ হওয়ার পথ আটকায়। প্রসঙ্গত, আস্ত শস্যদানায় মিনারেল, ভিটামিন, ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে থাকে। ফলে দেহের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হতেও সময় লাগেনা। তারুণ্য ধরে রাখুন প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে।

আঙ্গুর ফল খানঃ-

রেজভারেটল নামে একটি যৌগ রয়েছে এই ফলটিতে, যা একাধারে  অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-কোয়াগুলেন্ট। এই উপাদান দুটি হার্টকে ভালো রাখে। আর যেমনটা আগেও বলা হয়েছে যে শরীর তখনই চাঙ্গা থাকে, যখন হার্ট সুস্থ থাকে। তাই সুস্থ, রোগমুক্ত শরীরের অধিকারী হয়ে উঠতে প্রতিদিন একবাটি করে আ্ঙ্গুর খাওয়া জরুরী।

মটরশুঁটি খাবেনঃ-

হার্টকে নানা ক্ষতিকর উপাদানের হাত থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মটরশুঁটির কোন বিকল্প নেই। তাই আপনি যদি দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখতে চান, তাহলে হার্টকে সুস্থ রাথতেই হবে। এটা বয়স কমাতে বেশ উপকারী।

গ্রিন টি পান করতে পারেনঃ-

দিনে এক কাপ গ্রিন টি পান করা শরীরের অনেক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার, হৃদরোগ, এমনকি আলঝেইমার রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।

টমেটো খাবেনঃ-

লাইকোপেন নামের এক ধরনের অ্যান্টি-অক্মিডেন্ট রয়েছে টমেটোতে যা ত্বকের বয়স কমায়। শুধু তাই নয়, স্টমাক, লাং এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের মতো মারন রোগকে প্রতিরোধ করতেও এই সবজিটি দারুন কাজে আসে।

 নিয়মিত ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খানঃ-

শরীরের বয়স কমাতে এই উপাদানটির কোনো বিকল্প নেই। তাই আপনি যদি শরীর ও ত্বকের বয়সের পাশাপাশি শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে চান, তাহলে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন মটর, ডাল, ব্রকলি, ছোলা, অ্যাভোকাডো এবং ওটমিল আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না।

আরও পড়ুনঃ শরীরের ওজন কমানোর উপায়

মাছ খাওয়াঃ-

যেমনটা আমরা সকলেই জানি যে মাছে রয়েছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপাদানটি শরীরের অন্দরে যে কোনও ধরনের প্রদাহ কমাতে দারুন কাজে আসে। ফলে শরীরের বয়স বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। তাই সপ্তাহে দুবার অন্তত মাছ খান। এমনটা করলে দেখবেন স্ট্রোক এবং অ্যালঝাইমারের মতো রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমবে। ফলে বাড়বে আয়ু।

শেষ কথা

পরিশেষে বলা যায়, তারুণ্য ধরে রাখতে আরো অনেক খাবার রয়েছে। আপনার তারুণ্য ধরে রাখুন প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।