ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর বাড়ানোর উপায়
ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর বাড়ানোর উপায়ঃ
ব্লগ কিংবা ওয়েবসাইট বেজড বিজনেসে সফল হওয়ার একমাত্র উপায় ট্রাফিক বাড়ানো, আর এর জন্য আপনাকে সাইটটির সঠিক এসইও করতে হবে। আপনি ওয়েবসাইটে যত বেশি ট্রাফিক বাড়াতে পারবেন, ততো বেশি অ্যাড ভিউ হবে, ক্লিক রেট বাড়বে, লিড জেনারেট হবে এবং সার্ভিস ও ই-কমার্স শপের বিক্রি বৃদ্ধি হবে। কিন্তু, প্রশ্ন হলো, ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর বাড়ানোর উপায় কি!
অনেক নতুন ব্লগার, ওয়েবসাইট মালিক ট্রাফিক বৃদ্ধি করতে না পেরে অনলাইন বিজনেস এবং ব্লগ ছেড়ে দেন। আপনাকেও যেন এমন নির্মম পরিনাম বরণ করতে না হয়, সেই উদ্দেশ্যে আমি এখানে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর বাড়ানোর উপায়
১. কিওয়ার্ড রিসার্চ
গুগলে আপনার যদি এমন শত শত আর্টিকেল র্যাংক করে, যার সার্চ ভ্যালু নেই অর্থাৎ, এসব টপিক নিয়ে গুগলে লোকজন সার্চ করে না, তাহলে আপনি ট্রাফিক পাওয়ার আশা ছেড়ে দিতে পারেন।
অন্যদিকে, আপনি যদি এমন ৫-১০ টা আর্টিকেল গুগলে র্যাংক করাতে পারেন, যেগুলো নিয়মিত গুগলে প্রচুর সার্চ করা হয়, তাহলে কিন্তু ওয়েবসাইটে বেশ ভাল পরিমাণ ট্রাফিক নিয়ে আসা সম্ভব।
তাই, আর্টিকেল লেখা শুরু করার আগে কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস দিয়ে সার্চ ভলিয়্যুম আছে কিনা, চেক করে নিতে হবে।
তাছাড়া, নতুন সাইটের জন্য শর্ট টেইল কিওয়ার্ড এর চেয়ে লং টেইল কিওয়ার্ড নিয়ে র্যাংক করা সহজ। তাই দ্রুত র্যাংক করতে লং টেইল কিওয়ার্ড বাছাই করতেও কিওয়ার্ড রিসার্চ জরুরী।
২. রিলেভেন্ট কিওয়ার্ড এড করুন
কিওয়ার্ড রিসার্চ করার সময় সম্পর্কিত কিওয়ার্ড বাছাই করে নিতে হবে। যেমন: আমি যদি কিওয়ার্ড রিসার্চ কি, এই টপিক নিয়ে আর্টিকেল লিখতে চাই, তাহলে আমার জন্য রিলেভেন্ট কিওয়ার্ড হতে পারে জনপ্রিয় কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস, ফ্রি কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস, ইত্যাদি।
যদি আর্টিকেলটিতে সঠিকভাবে এসইও অপ্টিমাইজ করে রিলেভেন্ট কিওয়ার্ড যুক্ত করতে পারি এবং তা র্যাংক করে, তাহলে কিওয়ার্ড রিসার্চ কি, এই কিওয়ার্ড এর পাশাপাশি রিলেটেড কিওয়ার্ডগুলোর জন্যও কিছু ভিজিটর এক্সট্রা পেয়ে যাব।
৩. হাই কোয়ালিটি কন্টেন্ট
কন্টেন্ট ইজ আ কিং। আপনার কন্টেন্ট যদি ভাল হয়, তাহলে ডোমেইন অথরিটি, ব্যাকলিংক, অফপেজ এসইও করা না থাকলেও র্যাংক করার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু, সবকিছু থাকার পরেও যদি কন্টেন্ট ভাল না হয়, কোন লাভ নেই। গুগলে র্যাংক করতে পারবেন না, অর্থাৎ গুগল আপনার সাইটে ভিজিটর পাঠাবে না।
গুগল সমৃদ্ধ আর্টিকেল পছন্দ করে। সে চায় পাঠক এমন কোন আর্টিকেল পড়ুক, যেখানে তিনি তার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন, একই বিষয়ে নতুন করে অন্য কোন আর্টিকেল পড়ার প্রয়োজন হবে না।
তাই, আর্টিকেল লেখার সময় সম্পর্কিত বিষয়ে ভালভাবে স্টাডি করুন, রিসার্চ করার চেষ্টা করুন। ইতিমধ্যে র্যাংক করা আর্টিকেলগুলো পড়ে নিন, সেসব আর্টিকেলের গ্যাপ খুঁজে বের করে আপনার আর্টিকেলে ফিল আপ করুন।
৪. গেস্ট আর্টিকেল লিখুন
হাই সার্চ ডিফিকাল্ট কন্টেন্ট নিয়ে র্যাংক করার জন্য হাই কোয়ালিটি আর্টিকেলের পাশাপাশি প্রয়োজন শক্তিশালী ব্যাকলিংক।
ব্যাকলিংক কিভাবে কাজ করে তা বুঝতে একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ধরুন, আমরা দুজনই একই বিষয়ে হাই কোয়ালিটি আর্টিকেল লিখলাম এবং দুজনের এসইও স্কোরই ৯০। কিন্তু আপনি একটি শক্তিশালী ব্যাকলিংক পেয়ে গেলেন, এখন গুগল আপনার কন্টেন্টকে অধিক প্রাধান্য দিয়ে আমার চেয়ে আপনার কন্টেন্টকে ভালো র্যাংক দিবে। বুঝতেই পারছেন, ভাল র্যাংক মানে ওয়েবসাইটে আরো বেশি ট্রাফিক বাড়ানোর সুযোগ!
এজন্য, আপনার সাইটের সাথে সম্পর্কিত বা প্রতিদ্বন্দ্বী সাইটগুলোতে গেস্ট আর্টিকেল সাবমিট করুন। বিনিময়ে আপনি তাদের কাছ থেকে ব্যাকলিংক পেয়ে যাবেন।
সাইট বাছাই করার সময় অবশ্যই আপনার নিশ এর সাথে সম্পর্কিত সাইট বাছাই করবেন। আপনার নিশ এর সাথে সম্পর্কিত সাইট থেকে পাওয়া ব্যাকলিংক আপনার কন্টেন্টকে শক্তিশালী করবে। তবে সম্পর্কিত নয় এমন সাইট থেকে ব্যাকলিংক নিলে খুব একটা লাভ হবে না, বরং ক্ষতি হওয়ার সুযোগ আছে।
৫. সোশ্যাল মিডিয়া একটিভ রাখুন
একটি আর্টিকেল লেখার পর আমরা অনেকসময় পরবর্তীতে আর্টিকেলটির কথা ভুলে যাই। অন্যদিকে, অন্যান্য সাইট একই বিষয়ে আপডেটেড আর্টিকেল প্রকাশ করায় আমাদের প্রকাশনার র্যাংক নেমে যেতে শুরু করে।
এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন। নিয়মিত বিরতিতে পোস্টগুলো শেয়ার করার চেষ্টা করুন। এতে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ট্রাফিক পাওয়ার পাশাপাশি কিছু ফ্রি ব্যাকলিংক পেয়ে যাবেন যা গুগল আপনার পোস্টকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বাধ্য করবে এবং র্যাংক ধরে রাখতে সাহায্য করবে। যেকোন ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে এটি প্রমানিত।
ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর বাড়ানোর উপায়গুলোর মাঝে এই ৫টি সবচেয়ে প্রসিদ্ধ, কার্যকর এবং ফ্রি উপায়। এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য পেই বিজ্ঞাপম, স্পন্সরড আর্টিকেল, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, নিউজলেটার ইত্যাদির মাধ্যমে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর বাড়ানো যায়।
আশা করি, ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর বাড়ানোর উপায়গুলো আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের গ্রোথে কাজে আসবে।আজ আর কথা বাড়াচ্ছি না।